আজকাল ওয়েবডেস্ক: আপনার মস্তিষ্ক ক্রমশ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে, অথচ আপনি তা টেরও পাচ্ছেন না। নাহ্ এ কোনও ভাইরাস বা জীবাণুর কাজ নয়। বরং আপনার নিজেরই কর্মফল। অন্তত আধুনিক গবেষণা তেমনই বলছে। নেপথ্যে একটাই অভ্যাস - রিল দেখা।
কোনও ব্যক্তি যতই বুদ্ধিমান বা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হোন না কেন, প্রতিদিন যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আনমনে রিলস বা শর্টস স্ক্রল করে যান, তবে তাঁর মস্তিষ্ক কিন্তু অজান্তেই মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। ডোপামিনের অতিরিক্ত ক্ষরণ, মনোযোগের মেয়াদ কমে যাওয়া এবং মানসিক অবসাদ, এই সবই যেন আজকের প্রজন্মের কাছে ‘নিউ নরমাল’। সারাক্ষণ অস্থির লাগা সত্ত্বেও কোনও কাজ এগোচ্ছে না। বিনোদনের সাগরে ভাসছেন, কিন্তু ভিতরটা ফাঁকা। এই অনুভূতিগুলো কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়, এ হল স্নায়বিক ক্ষতির প্রত্যক্ষ লক্ষণ।
আরও পড়ুন: ২৬৪৫ লিটার স্তন্য উৎপন্ন হয় বধূর শরীরে! 'রোজ রাতে ৩ ঘণ্টা..' বিপুল দুগ্ধ উৎপাদনের রহস্য ফাঁস করলেন নিজেই
আরও পড়ুন: ১২ জন স্ত্রী! বাচ্চা করাই নেশা! ১০২ সন্তানের বাবা হয়ে অবশেষে থামলেন ৬৮-র মুসা, কেন ক্ষান্ত দিলেন? কী বললেন এ যুগের ধৃতরাষ্ট্র?
গবেষকদের মতে, রিল যেহেতু খুব অল্প সময় চলে তাই সেই প্রতি ১৫ সেকেন্ডের ভিডিও দেখে মস্তিষ্ক এক লহমায় প্রচুর পরিমাণ ডোপামিন ক্ষরণ করে। এর ফলে ধীরে ধীরে বদলে যায় মস্তিষ্কের গঠন। নতুন এই গঠন কেবল তাৎক্ষণিক আনন্দ খোঁজে। দীর্ঘমেয়াদি যে কোনও রকম প্রচেষ্টা বা পরিশ্রমকে নাকচ করে দেয়। এর ফলাফল হিসাবে বই পড়া বড্ড ধীর গতির মনে হয়। গভীর আলোচনাও একঘেয়ে লাগে। ফলে প্রকৃত জ্ঞান অর্জন অসহ্য মনে হয়। মস্তিষ্ক মনঃসংযোগ এবং বিকাশের জন্য তৈরি, কিন্তু সেই মস্তিষ্ক এখন ক্রমাগত সাময়িক আকর্ষণের পিছনে চক্রাকারে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিয়ো বা শর্ট-ফর্ম কনটেন্ট দেখার অভ্যাস স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং উদ্বেগ ও অবসাদ বাড়ায়। বহু ক্ষেত্রেই মানুষ যাকে ক্লান্তি ভাবছেন, সেটি আসলে অতি-উদ্দীপনার ফল। অলস নন, আপনি কৃত্রিম উত্তেজনায় আসক্ত।
তাহলে এখন উপায়? গবেষকরা জানাচ্ছেন শুরুতে কিছুই না করে বসে থাকার অভ্যাস করুন। আক্ষরিক অর্থেই। শুধুই চুপচাপ বসুন। কানে হেডফোন ছাড়া হাঁটতে যান। অন্তত কয়েক পাতা বই পড়ুন। শান্ত হয়ে শ্বাস নিন। প্রথম প্রথম এই নীরবতা অসহ্য মনে হতে পারে। কিন্তু সেটা আসক্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসার প্রাথমিক অস্বস্তি বোধ। ধূমপান বা মদ্যপান ছাড়তে গেলে যেমন ‘উইথড্রয়াল’ হয়, ঠিক তেমনই। কিন্তু মনে রাখবেন এই অস্বস্তি পেরিয়ে গেলেই পাবেন শৃঙ্খলা এবং মানসিক শক্তি।
