২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) তোলা আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইপিএফও অ্যাকাউন্টকে ইউপিআই ও এটিএম-এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। ফলে ব্যাঙ্কের মতোই মুহূর্তে টাকা তোলা যাবে পিএফ তহবিল থেকে। তবে এই স্বস্তি ও সুবিধাকে কেন্দ্র করেই মাথাচাড়া দিয়েছে বড় চিন্তা।
2
6
ভারতের বেশিরভাগ মানুষই অবসর জীবনের আর্থিক পরিকল্পনা নিয়ে তেমন সচেতন নন। বিশেষ করে বেসরকারি কর্মীদের বড় অংশ জানেনই না তাঁদের আর্থিক ভবিষ্যত। চাকরি হারানো, অসুস্থতা, সন্তানদের পড়াশোনা, বিয়ে কিংবা বাড়ি কেনার মতো পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্তের শেষ ভরসা হয়ে ওঠে পিএফ।
3
6
বর্তমানে পিএফ তোলার প্রক্রিয়া বেশ জটিল। সেই জট কাটাতেই ডিজিটাল ব্যবস্থার দিকে হেঁটছে সরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অতিরিক্ত সহজলভ্য হলে পিএফ-এর দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ভেঙে যাবে। দৈনন্দিন প্রয়োজন, এমনকী কেনাকাটার মতো ছোটখাটো খরচেও মানুষ পিএফ থেকে টাকা তুলতে পারেন।
4
6
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পরিস্থিতি এমন হতে পারে যে পিএফ অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা থাকুক বা ১০ হাজার, ইউপিআই-এর এক ক্লিকেই মুহূর্তে উধাও হয়ে যেতে পারে সব সঞ্চয়। ২০ বছর ধরে টাকা জমিয়ে অবসর জীবনে পৌঁছে হাতে কিছুই না থাকার ঝুঁকি তৈরি হবে। সেই সঙ্গে পিএফ-এর বর্তমান ৮.২৫ শতাংশ সুদের তুলনায় বেশি রিটার্নের আশায় অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ মিউচুয়াল ফান্ড বা শেয়ার বাজারের দিকেও ঝুঁকতে পারেন।
5
6
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ইপিএফও-র সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি, মোট তহবিল প্রায় ২৫ লক্ষ কোটি টাকা। কর্মী ও নিয়োগকর্তা, দু’পক্ষই বেসিক বেতনের ১২ শতাংশ করে পিএফ-এ জমা দেন। দেশে মোট সঞ্চয়ের হার ৩১ শতাংশ হলেও মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেন। শহরে এই হার ১৫ শতাংশ, গ্রামে ৬ শতাংশ। এখনও ৬৯ শতাংশ মানুষ ব্যাঙ্কের এফডি-কেই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করেন।
6
6
অন্যদিকে, অটল পেনশন যোজনায় সদস্য সংখ্যা ৮.৩৪ কোটি হলেও, দীর্ঘদিন টাকা জমিয়েও সর্বোচ্চ মাসিক পেনশন মাত্র ৫,০০০ টাকা। ফলে পিএফ যদি সহজেই শেষ হয়ে যায়, ভবিষ্যতে অবসর জীবনে আর্থিক নিরাপত্তা বড় প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।