আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৮টা নাগাদ হঠাৎ করেই উত্তরবঙ্গের আকাশে দেখা গেল এক অদ্ভুত আলো। বিশেষ করে কোচবিহার জেলা থেকে জ্বলন্ত অগ্নি-পিণ্ড ও বিকট শব্দ শুনে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। এই একই ছবি ধরা পড়েছে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি জেলা থেকেও। 

জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি, কোচবিহার সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা আকাশে জ্বলন্ত বস্তু ভেসে যেতে দেখার দাবি করেন। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাটি নিয়ে আতঙ্ক ও নানা জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ভারতের একাধিক দূতাবাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি।

এরই মধ্যে গত রবিবার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জলপাইগুড়ি ও চোপড়ার আকাশে হাসিমারা ঘাঁটি থেকে উড়ে যাওয়া দুটি রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে বায়ুসেনার সামরিক মহড়ার খবর প্রকাশ্যে আসে।

ফলে বৃহস্পতিবার রাতে আকাশে জ্বলন্ত বস্তু দেখেই অনেকের মনে প্রথমে সামরিক মহড়া বা যুদ্ধবিমানের সঙ্গে কোনও ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়।

কিন্তু রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে একই ধরনের দৃশ্য দেখার খবর সামনে আসতে থাকে। এর পরই গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াতে শুরু করে।

কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ এলাকায় এই রহস্যময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও অনেকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেখলিগঞ্জ ব্লকের উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাচিমেরহাট এলাকায় রাতের অন্ধকারে হঠাৎ আকাশে একটি উজ্জ্বল আলোর রেখা দেখা যায়।

মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের গোলার মতো একটি বস্তু বিকট শব্দ করতে করতে আকাশ চিরে নিচের দিকে নেমে আসে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য গোটা এলাকা আলোয় ঝলমল করে ওঠে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।

আচমকা এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কে বহু মানুষ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। ঘটনার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়তেই কাচিমেরহাট ও সংলগ্ন এলাকায় কৌতূহল ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়।

কেউ কেউ একে উল্কাপিণ্ড বলে অনুমান করছেন। আবার অনেকের ধারণা, এটি কোনও কৃত্রিম উপগ্রহের ভাঙা অংশ বা আকাশপথে চলাচলকারী কোনও বস্তু হতে পারে।

সামাজিক মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় নানা জল্পনা। ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকায় উল্কাপাতের ঘটনা ঘটেছে।

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর নেই। মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে গুজবে কান না দেওয়ার এবং শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শিলিগুড়ির এসপি জানিয়েছেন, ‘আমরা নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছি। সাধারণ মানুষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনও খোঁজ পেলে জানাতে। তবে ঘটনার উৎস সম্পর্কে এখনও বিশদে কিছু জানা যায়নি। ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি। প্রাথমিক তদন্তে উল্কাপাত বলেই মনে করা হচ্ছে।’