আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা আইপিএলের মূলমন্ত্রই হল যেখানে প্রতিভা সুযোগের সঙ্গে মিলে যায়। এই কথাটা আরও একবার সত্য প্রমাণিত হল।
কোনও পেশাদার ক্রিকেট না খেলেই আইপিএল নিলামের তালিকায় জায়গা করে নিলেন ২০ বছরের ইজাজ সাওয়ারিয়া। ইনস্টাগ্রামে নেটে বল করার ছোট ছোট ভিডিও (রিল) পোস্ট করেই স্কাউটদের চোখে পড়েন তিনি। এবার বিশ্ব ক্রিকেটের তাবড় তাবড় তারকাদের পাশে নিজের নাম তুলে ধরেছেন এই তরুণ।
উত্তর কর্ণাটকের ছোট শহর বিদারে বড় হয়েছেন ইজাজ। গত তিন বছর ধরে অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সুযোগ পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২২ সালে নিজের পূর্বপুরুষের বাড়ি রাজস্থানে পাড়ি দেন ক্রিকেটের স্বপ্ন পূরণের আশায়।
কিন্তু সেখানেও খেলার সুযোগ না পেয়ে তিনি বেছে নেন ভিন্ন এক পথ। যা শেষ পর্যন্ত তাঁকে এনে দিল বড় স্বীকৃতি। ইজাজের একটি ইনস্টাগ্রাম রিল নজরে পড়ে ইংল্যান্ডের স্পিনার আদিল রশিদের।
সেই উৎসাহেই তিনি আরও নিয়মিতভাবে নিজের বোলিংয়ের ভিডিও পোস্ট করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে তাঁর প্রতিভা নজরে আসে প্রাক্তন পাঞ্জাব কিংস বোলিং কোচ সুনীল যোশি এবং চেন্নাই সুপার কিংসের স্কাউটদের।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে ইজাজ বলেন, ‘আমি ভাবলাম রিল পোস্ট করতে থাকি। সত্যি বলতে, শুরুতে ভাবিনি বিষয়টা এত দূর যাবে। কোনও ফলাফলের কথা না ভেবে শুধু পোস্ট করে গিয়েছি। প্রতিদিন অনুশীলনের পর কিছুটা সময় থাকত। তখন একটা রিল বানিয়ে পোস্ট করতাম। প্রায় প্রতিদিনই একটা করে রিল পোস্ট করাই আমার রুটিন হয়ে গিয়েছিল।’
নিজের বানানো রিলগুলির মাধ্যমেই নজর কাড়েন ইজাজ। চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) ও পাঞ্জাব কিংস (PBKS) দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাঁকে ট্রায়ালের জন্য ডাকে।
বিশেষ করে পাঞ্জাব কিংসের স্কাউটদের তিনি মুগ্ধ করেন। যার ফলস্বরূপ আইপিএল নিলামে তাঁর নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ইজাজ আরও জানান, ‘আদিল রশিদ যখন আমার রিলে কমেন্ট করতে শুরু করলেন, তখনই মনে হল আমি কিছু না কিছু করতে পারি। উনি একাধিক ভিডিওতে কমেন্ট করেছেন। চেন্নাই সুপার কিংসও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সুনীল যোশি স্যার আমার রিল দেখে নম্বর চান। তারপর পাঞ্জাব কিংস আমাকে লখনউয়ে ট্রায়ালের জন্য ডাকে। ওরা আমার বোলিং দেখে এবং পছন্দ হলে সব নথি যাচাইয়ের পর আইপিএল নিলামের জন্য আমার নাম পাঠায়।’
এদিন আইপিএল নিলামের চতুর্থ ও শেষ সেটে আনক্যাপড স্পিনার হিসেবে ২৬৫ নম্বরে তালিকাভুক্ত ইজাজ সাওয়ারিয়া। তাঁর বেস প্রাইস ৩০ লক্ষ টাকা।
নিলামে স্পিনারদের চাহিদা বেশি থাকার সম্ভাবনায় প্রতিভার জোরে একাধিক দলের নজর কেড়ে নিতে পারেন তিনি। আশা করা হচ্ছে, নিলামে দরও হাঁকাবে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি।
যদি ইজাজ এদিন আইপিএলে দল পান সেক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রাম রিল থেকে শুরু করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি লিগে পৌঁছনোর এই গল্প নিঃসন্দেহে অনেকের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে।
