আজকাল ওয়েবডেস্ক: পিঠ, কোমর বা শরীর জুড়ে ব্যথা- কমবেশি সব মহিলাই জীবনের কোনও না কোনও সময়ে এই সমস্যার সম্মুখীন হন। কিন্তু এই অস্বস্তি যখন কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস জুড়ে চলতে থাকে, তখন তা ক্রমেই বড়ো ধরনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বহু মহিলা এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। তাঁদের মূল অভিযোগ, সব রকম ওষুধ খাওয়ার পরেও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলছে না। অনেকেই আবার চিকিৎসকের পরামর্শে বা নিজের উদ্যোগে একগুচ্ছ পরীক্ষা নিরীক্ষা করান। কিন্তু রিপোর্ট স্বাভাবিক এলে সমস্যা আরও বাড়ে। কী করণীয়, তা নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা।

তবে চিকিৎসকদের মতে, এই ভোগান্তির অবসানে সব সময় দামী পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। তাঁদের দাবি, প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই ব্যথার কারণ নির্ণয় করা সম্ভব মাত্র তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে। এই পরীক্ষাগুলি তুলনায় অনেক সস্তা এবং সহজলভ্য।
বিশেষজ্ঞরা মূলত তিনটি পরীক্ষার উপর জোর দিচ্ছেন-

১। ভিটামিন ডি৩ এবং ক্যালসিয়াম: শরীরে ভিটামিন ডি৩ এবং ক্যালসিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা।
২। সিবিসি এবং আয়রন প্রোফাইল: কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট এবং আয়রন প্রোফাইল, যা রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
৩। ডেক্সা স্ক্যান: চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাদের জন্য ডেক্সা স্ক্যান, যা হাড়ের ঘনত্ব পরিমাপ করে।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মহিলাদের মধ্যে প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ পেশি ও হাড়ের ব্যথার নেপথ্যে থাকে ভিটামিন ডি৩ এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি। মহিলাদের শারীরিক গঠন, হরমোনের পরিবর্তন এবং জীবনশৈলী এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমতে শুরু করলে হাড় ক্ষয়ের গতি বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময়ও মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি শিশুর দেহে সঞ্চালিত হয়, ফলে মায়ের শরীরে এর ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতির ফলেই ধীরে ধীরে হাড় ও পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সারা শরীরে ব্যথা ও ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই

একইভাবে, সিবিসি এবং আয়রন প্রোফাইল পরীক্ষা রক্তাল্পতার মতো একটি নীরব সমস্যাকে চিহ্নিত করতে পারে। ঋতুস্রাব, গর্ভাবস্থা এবং পুষ্টির অভাবের ফলে ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে অ্যানিমিয়া একটি গুরুতর সমস্যা। রক্তাল্পতার কারণে শরীরের পেশি এবং কোষগুলিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না, যার ফলে ক্লান্তি, পেশিতে ব্যথা, মাথাব্যথা এবং পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

কিন্তু যদি ভিটামিন ডি৩, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং থাইরয়েডের মাত্রা স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও ব্যথা না কমে? চিকিৎসকদের মতে, তখন বাকি ৫ শতাংশ কারণের কথা ভাবতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
অটোইমিউন ডিজিজ রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা লুপাসের মতো রোগ, যার ফলে গাঁটে ব্যথা, অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ক্লান্তি দেখা যায়।

ফাইব্রোমায়ালজিয়া
এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে সারা শরীরে তীব্র ব্যথার পাশাপাশি ঘুমের সমস্যা এবং মনোযোগের অভাব দেখা দেয়।
থাইরয়েডের সমস্যা হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজম
উভয় ক্ষেত্রেই শরীরের বিপাক ক্রিয়া এবং পেশির স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে।
সুতরাং, শরীর জুড়ে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় ভুগলে অযথা দুশ্চিন্তা না করে বা দামী পরীক্ষার পিছনে না ছুটে, বিশেষজ্ঞের পরামর্শে এই নির্দিষ্ট কয়েকটি পরীক্ষা করানোই শ্রেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর মাধ্যমে সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে সঠিক চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব।