স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই

img

কে বলে পৃথিবীতে ড্রাগন নেই? ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া যায় এমন এক প্রাগৈতিহাসিক চেহারার সরীসৃপ যাঁর নাম সত্যি সত্যিই ড্রাগন। আরও ভাল ভাবে বললে কোমোডো ড্রাগন।

img

কোমোডো ড্রাগন হল বিশ্বের বৃহত্তম গিরগিটি প্রজাতির প্রাণী। এদের আকার যেমন বিশাল, শিকারের কৌশল তেমনই হিংস্র! এক একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কোমোডো ড্রাগন লম্বায় প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট (৩ মিটার) পর্যন্ত হতে পারে এবং এদের ওজন হয় ৭০ থেকে ৯০ কেজি পর্যন্ত।

img

দেখতেও রীতিমতো ভয় ধরানো এই প্রাণী! এদের ত্বক অমসৃণ এবং শক্ত আঁশে ঢাকা, যা অনেকটা বর্মের মতো কাজ করে। সঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী লেজ, ধারালো নখ এবং করাতের মতো প্রায় ৬০টি দাঁত।

img

এদের ঘ্রাণশক্তি এতই প্রখর যে সাপের মতো চেরা জিহ্বার সাহায্যে এরা বাতাসের গন্ধ শুঁকে মাইলের পর মাইল দূর থেকেও শিকার বা মৃত প্রাণীর অবস্থান নির্ণয় করতে পারে।

img

মাংস ছাড়া কিছুই মুখে রোচে না কোমোডো ড্রাগনের। ছোট হরিণ, বুনো শূকর থেকে শুরু করে বিশাল আকারের মহিষও শিকার করে এই দৈত্যাকার গিরগিটি।

img

শিকারের পদ্ধতিটিও মারাত্মক ভয়ঙ্কর। এরা মূলত অতর্কিতে আক্রমণ করে শিকার ধরে। শিকার কাছাকাছি এলে শক্তিশালী পা ও লেজের ঝাপটায় তাকে ঘায়েল করে প্রথমে, তারপর ধারালো দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে।

img

এখানেই শেষ নয়। এদের লালাগ্রন্থিতে মারাত্মক বিষ রয়েছে। এই বিষ শিকারের রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এবং শরীরকে অসাড় করে তোলে। ফলে কামড় খাওয়ার পর শিকার যদি পালিয়েও যায়, বিষক্রিয়া এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্বল হয়ে মারা যায়। তার পর ড্রাগন তার প্রখর ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে ঠিক তাকে খুঁজে বের করে।

img

সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাস এদের প্রজনন ঋতু। স্ত্রী ড্রাগন সেপ্টেম্বরে প্রায় ৩০টির মতো ডিম পাড়ে এবং প্রায় আট মাস ধরে সেই ডিমে তা দেয়। বাচ্চা ফুটে বের হওয়ার পর প্রথম কয়েক বছর তারা গাছে কাটায়। এরা এতই হিংস্র যে সুযোগ পেলে একটি ড্রাগন অন্য ড্রাগনের শিকার করতেও ছাড়ে না!

img

প্রজননের সময় রীতিমতো যুদ্ধ করে পুরুষ ড্রাগনরা। জয়ী ড্রাগন এরপর স্ত্রী ড্রাগনের পিঠে আঁচড় কাটে আর তাকে জিভ দিয়ে লেহন করে। যদি স্ত্রী ড্রাগনটিও পাল্টা পুরুষ ড্রাগনটিকে লেহন করে, তবেই মিলিত হয় তারা।