আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্ণাটক সরকার মাল্টিপ্লেক্স-সহ রাজ্যের সব প্রেক্ষাগৃহে আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য সিনেমার হলে টিকিটের মূল্য ২০০ টাকায় বেঁধে দিয়েছে। ২০১৭ সালের পর পুনরায় এই নিয়ম চালু করল সিদ্দারামাইয়া সরকার। ১৫ জুলাই জারি করা আদেশটি স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কারাগার ও সিনেমা বিভাগের রাজ্য আন্ডার সেক্রেটারি স্বাক্ষর করেছেন।
বিধানসভায় বাজেট পেশ করতে গিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য টিকিটের মূল্য মানসম্মত করা এবং আরও বেশি দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে কন্নড় এবং অন্যান্য ভাষার চলচ্চিত্র দেখতে উৎসাহিত করা।
কর্ণাটক সিনেমা (নিয়ন্ত্রণ) নিয়ম, ২০১৪ সংশোধনের মাধ্যমে টিকিটের নির্ধারিত দাম আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হয়েছে। নতুন উপনিয়মে বলা হয়েছে যে রাজ্যের যে কোনও ভাষার সিনেমার জন্য টিকিটের দাম বিনোদন কর সহ ২০০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। এই পদক্ষেপের ফলে মাল্টিপ্লেক্সের টিকিটের দাম বেশি হওয়ার যে অভিযোগ রয়েছে, সেটিরও সমাধান করবে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় রুপির প্রতীক তৈরি করেছিলেন কারা? একজনকে মনে রাখেনি কেউ
২০১৭ সালে সিদ্দারামাইয়া-র প্রথম মেয়াদে টিকিট দাম ধার্য করে দেওয়ার পদক্ষেপ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের পর মাল্টিপ্লেক্স মালিকরা রাজস্ব ক্ষতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। পরে কর্ণাটক হাইকোর্টে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন। যার ফলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এবার মাল্টিপ্লেক্সগুলি কীভাবে সাড়া দেয় তা দেখার বিষয়।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে কর্ণাটক ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্স এবং কর্ণাটক ফিল্ম এক্সিবিটরস অ্যাসোসিয়েশন তাদের সমর্থন জানিয়েছে। তাদের বিশ্বাস, মাল্টিপ্লেক্স মালিকদের অতীতে বিরোধিতা সত্ত্বেও, এই সিদ্ধান্তের ফলে কন্নড় চলচ্চিত্র দেখতে প্রেক্ষাগৃহে আরও বেশি দর্শক ভিড় জমাবেন।

মাল্টিপ্লেক্সগুলি এর আগে সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তাদের যুক্তি, টিকিটের দাম নির্ধারণ করে দিলে আর্থিক স্থায়িত্ব এবং পরিচালনা খরচের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই সীমার উদ্দেশ্য হল সিনেমাকে আরও বৃহত্তর দর্শকদের কাছে সহজলভ্য করা। হলে দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক চলচ্চিত্রের আরও ভাল ভাবে প্রদর্শন করা। এই নীতি কতটা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যায় এবং দর্শক উপস্থিতির উপর এর প্রকৃত প্রভাব কতটা তা এখনও দেখার বিষয়।
সামগ্রিকভাবে, কর্ণাটকের আঞ্চলিক সিনেমাকে সমর্থন করার জন্য ক্যাপটির পুনঃপ্রয়োগ একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। যার লক্ষ্য দর্শকদের ক্রয়ক্ষমতার পাশাপাশি থিয়েটারের আর্থিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখা।
যদিও অনেকেই এই পদক্ষেপকে সিনেমাপ্রেমীদের জন্য সুখবর হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু অনেকেই রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। একজন প্রশ্ন করেছেন, “যদি সরকার সিনেমা হলের টিকিটের দাম নির্ধারিত করতে যা অত্যাবশ্যকীয় নয়, তাহলে কেন স্কুলের ফি নির্ধারিত করতে পারবে না যা অপরিহার্য? এর কারণ কি অধিকাংশ রাজনীতিবিদদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে?” একজন রাজ্য সরকারে এই সিদ্ধান্তকে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির পতন হিসেবেও বর্ণনা করেছেন।
অন্য একজন ব্যবহারকারী উল্লেখ করেছেন, "ঔষধ ও হাসপাতালের চার্জ, ডায়াগনস্টিক পরিষেবা ও ল্যাব পরীক্ষা, এবং শিক্ষা, টিউশন এবং কোচিং ফি-র খরচও নির্ধারিত করা উচিৎ। কারণ, এগুলি সত্যিই অপরিহার্য।“
