আজকাল ওয়েবডেস্ক: ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বড় স্বস্তি সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর জন্য। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় মঙ্গলবার দিল্লির একটি আদালত, এই দুই শীর্ষ কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগে আমল দিতে অস্বীকার করেছে।
রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতের বিশেষ বিচারক (পিসি অ্যাক্ট) বিশাল গোগনে বলেছেন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ)-এর অধীনে দায়ের করা অভিযোগটি গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ মামলাটি একটি ব্যক্তিগত অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছিল, কোনও এফআইআর-এর ভিত্তিতে নয়।
গান্ধী পরিবার ছাড়াও ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সুমন দুবে, স্যাম পিত্রোদা, ডটেক্স মার্চেন্ডাইজ, সুনীল ভাণ্ডারি এবহং ইয়াং ইন্ডিয়ান'কেও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অভিযুক্ত করা হয়।
কংগ্রেস দাবি করেছে যে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্ত একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে যে, এই মামলায় জালিয়াতি এবং অর্থ পাচারের প্রমাণ-সহ একটি গুরুতর অর্থনৈতিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত। ইডি অভিযোগ করেছে যে, অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডের ২,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে দখল করা হয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে সূত্র জানিয়েছে যে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সম্ভবত রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তাদের আইনি দল রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতের দেওয়া রায়ের বিস্তারিত মূল্যায়ন করবে।
সূত্রগুলো বলেছে যে, ব্যক্তিগত অভিযোগটি কোনও সাধারণ ব্যক্তিগত অভিযোগ ছিল না। এই নির্দিষ্ট আদেশকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ইডি নতুন করে আপিল করবে। সূত্রগুলো বলেছে যে, বিচারক সম্ভবত বিজয় মদনলাল চৌধুরী রায়ের প্রাসঙ্গিক অনুচ্ছেদগুলো উপেক্ষা করেছেন।
এদিকে, ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ তথা অভিজ্ঞ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, "যখন আমি মামলাটি নিয়ে যুক্তি দেওয়া শুরু করি... যুক্তিতর্কের সময় আমি আদালতকে বলেছিলাম যে এটি একটি খুব অদ্ভুত মামলা, যেখানে অর্থের এক মিলিমিটারও নড়চড় হয়নি, স্থাবর সম্পত্তির এক মিলিমিটারও নড়চড় হয়নি, সমস্ত সম্পত্তি এজেএল-এর কাছেই রয়েছে এবং এখানে অর্থ পাচার হয়েছে... এজেএল এখন ৯০ শতাংশ অন্য একটি কোম্পানি ইয়াং ইন্ডিয়ার মালিকানাধীন - এটাই যা ঘটেছে। মামলাটিকে কোনও গুরুত্ব দেওয়ারই প্রযোজন নেই, এবং এখানে দেখুন বিজেপি কী পরিমাণ হইচই করেছে... তারা অতিরঞ্জনের একটি বিশাল কাঠামো তৈরি করেছে।"
স্বাধীনতার আগে কংগ্রেসের নিজস্ব সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল হেরাল্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ৷ এর প্রকাশনা সংস্থা এজেএল এবং এই দু'টির মালিকানা ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড-এর ৷
ইয়ং ইন্ডিয়ান-এর সবচেয়ে বেশি অংশীদারি সোনিয়া ও রাহুলের কাছে ৷ প্রত্যেকে ৩৮ শতাংশের মালিক ৷ তাই সব মিলিয়ে শুধু গান্ধি পরিবারের কাছে ৭৬ শতাংশ অংশীদারি রয়েছে ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, তদন্তে উঠে এসেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠা ইয়ং ইন্ডিয়ার 'বেনিফিসিয়ালি ওনড' মালিকানা সোনিয়া ও রাহুল গান্ধির ৷ এদিকে তাঁরা এজেএল-এর ২ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যে কিনে নিয়েছেন ৷ এই সম্পত্তির দাম উল্লেখযোগ্য়ভাবে কম ৷
চার্জশিটে ইডি উল্লেখ করেছিল, সোনিয়া গান্ধি দলের সভানেত্রী থাকাকালীন তাঁর পদমর্যাদার অপব্যবহার করেছেন ৷ তাঁর ও তাঁর ছেলে রাহুলের ব্যক্তিগত ফায়দার জন্য ইয়ং ইন্ডিয়ার মাধ্যমে জনগণের টাকা প্রতারণা করেছেন ৷ ২০২২ সালে এই মামলায় একাধিক বার ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোনিয়া ও রাহুলকে জেরা করেছে ইডি ৷
