ভারতীয় রেলওয়ে অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের সুপারিশ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এরফলে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত বেতনের চাপ আসতে পারে রেলের ওপর। তার আগেই নিজেদের আর্থিক অবস্থান মজবুত করতে ব্যাপক খরচ কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।
2
10
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ, ক্রয় এবং শক্তি এই তিনটি বড় খাতে ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রেলওয়ে। এটি দ্রুত কার্যকর করা হবে।
3
10
উল্লেখ্য, অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন গঠিত হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। এই কমিশনের কাজ হল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের বেতন, ভাতা এবং পেনশনের কাঠামো পর্যালোচনা করে নতুন সুপারিশ পেশ করা।
4
10
কমিশনের চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এই কমিশনের সুপারিশ ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
5
10
এই কমিশনের আওতায় প্রায় ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, যার মধ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মীরাও রয়েছেন, এবং প্রায় ৬৯ লক্ষ পেনশনভোগী অন্তর্ভুক্ত হবেন। কমিশন গঠনের পর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা, পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী অন্তর্বর্তী রিপোর্টও পেশ করা হবে।
6
10
এর মধ্যেই ভারতীয় রেলওয়ের আর্থিক অবস্থার দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রেলওয়ের অপারেটিং রেশিও দাঁড়িয়েছে ৯৮.৯০ শতাংশে। ফলে নেট রাজস্ব হয়েছে মাত্র ১,৩৪১.৩১ কোটি টাকা। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে রেলওয়ে অপারেটিং রেশিও কমিয়ে ৯৮.৪২ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য নিয়েছে। সেই সঙ্গে নেট রাজস্ব বাড়িয়ে ৩,০৪১.৩১ কোটি টাকায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
7
10
আরও একটি ইতিবাচক দিক হল ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষ থেকে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ফাইন্যান্স কর্পোরেশনকে বার্ষিক যে অর্থ পরিশোধ করতে হয়, তা কমে আসবে বলে মনে করছে রেল। কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে রেলওয়ের বড় অঙ্কের মূলধনী ব্যয় মূলত গ্রস বাজেটারি সাপোর্ট থেকে মেটানো হয়েছে। ফলে স্বল্পমেয়াদি নতুন ঋণ নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই।
8
10
রেলওয়ের এক আধিকারিকের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষে যখন বেশি বেতন পরিশোধ করতে হবে, তখন মালবাহী পরিবহন থেকে আয় প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ওই আধিকারিকের মতে, “রেলওয়ে তার আর্থিক অবস্থা এমনভাবে গুছিয়ে নেবে যাতে ভবিষ্যতের অতিরিক্ত ব্যয়ের ধাক্কা সহজেই সামলানো যায়। অর্থের কোনও সংকট হবে না।”
9
10
সপ্তম বেতন কমিশন গঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং তার সুপারিশ কার্যকর হয় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। সাধারণত প্রতি ১০ বছর অন্তর নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হয়। সেই ধারাবাহিকতায় অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশও ২০২৬ সালের শুরু থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা।
10
10
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের প্রকৃত আয়ের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব সামাল দিতে ডিয়ারনেস অ্যালাউন্স প্রদান করা হয়। মুদ্রাস্ফীতির হারের ভিত্তিতে বছরে দু’বার, অর্থাৎ প্রতি ছয় মাস অন্তর ডিএ-র হার সংশোধন করা হয়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মচারীদের আর্থিক দিকটি সঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়।