নতুন শ্রম আইন ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এরফলে ভারতের বেতন কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে। এই আইনের মূল লক্ষ্য হল বেসিক বেতন, ভেরিয়েবল পে এবং দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক সুরক্ষা।
2
9
নতুন এই কাঠামো সারা দেশের জন্য একটি বিশেষ মানদণ্ড তৈরি করেছে। এর ফলে আগের সেই ব্যবস্থা থেকে সরে আসা হচ্ছে যেখানে নিয়োগকর্তারা নিজেদের মতো করে বেতন কাঠামো সাজানোর স্বাধীনতা পেতেন।
3
9
আগে অনেক সংস্থাই কম বেসিক বেতনের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে তাকে নানা ছোট ছোট উপাদানে ভাগ করে দিত। কিন্তু নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী, এখন কোনও কর্মীর মোট বেতনের অন্তত ৫০ শতাংশ অবশ্যই বেসিক হিসেবে দিতে হবে। বাকি অংশ ভাতা বা অন্যান্য উপাদান হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।
4
9
ভেরিয়েবল পে যেমন ইনসেনটিভ, বোনাস বা পারফরম্যান্স-ভিত্তিক পারিশ্রমিক বেসিক বেতনের আওতার মধ্যে পড়ে না। তবে আইন এখানে একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা রেখেছে। যদি কোনও কর্মীর ভেরিয়েবল পে নির্ধারিত সীমার বাইরে চলে যায় এবং বেসিক বেতনের অংশ কমে যায়, তাহলে সেই অতিরিক্ত ভেরিয়েবল পে মোট মজুরির অংশ হিসেবে ধরা হবে।
5
9
এই পরিবর্তনের ফলে কর্মীরা দীর্ঘমেয়াদে আরও স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে, নিয়োগকর্তাদের বেতন কাঠামো নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন আইন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, বেসিক বেতন কমিয়ে ভেরিয়েবল পে বাড়ানো যাবে না।
6
9
নতুন আইন অনুযায়ী গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা ন্যায্য ও স্থিতিশীল ভিত্তিতে গণনা করা হবে। আগে অনেক সংস্থাই ইচ্ছাকৃতভাবে কম বেসিক বেতন রেখে পিএফ ও গ্র্যাচুইটি কম দিত। নতুন আইনে সেই পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
7
9
যদি কোনও সংস্থায় বেসিক বেতন মোট পারিশ্রমিকের ৫০ শতাংশের কম হয়, তাহলে সেই ঘাটতিকে আইনি হিসাবে ‘মজুরি’ হিসেবে ধরা হবে এবং তার উপর পিএফ ও গ্র্যাচুইটির হিসাব হবে। এর ফলে অবসরকালীন সঞ্চয়ে কর্মীদের ক্ষতির সম্ভাবনা কমবে। কারণ বেসিক বেতন কম হলে পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও পেনশনের অঙ্কও কমে যায়।
8
9
এই সমস্যা দূর করতেই ৫০ শতাংশের নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনও সংস্থা যদি বেশি ভেরিয়েবল পে দিতে চায়, তাহলে তাকে কর্মীর বেসিক বেতন বাড়িয়ে ন্যূনতম সীমা মানতেই হবে। এতে কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা সুরক্ষিত থাকবে।
9
9
সংস্থাগুলির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী বেতন কাঠামো পুনর্গঠন করা। বেসিক বেতন বাড়লে পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও অন্যান্য সুবিধায় সংস্থার মোট খরচও বাড়বে। বিশেষ করে সেই সমস্ত সংস্থা যারা বহু রাজ্যে কাজ করে, তাদের পে-রোল সিস্টেম, এইচআর নীতি এবং রাজ্যভিত্তিক নিয়মাবলি নতুন করে সাজাতে হবে।