আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেজিং সফলভাবে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন (ম্যাগলেভ) প্রযুক্তি পরীক্ষা করেছে, যার ফলে আরও দ্রুতগতিতে ট্রেন ছোটানোর সম্ভাবনা তৈরি রয়েছে। চীনের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ম্যাগলেভ প্রযুক্তির ট্রেনগুলি মাত্র ১৫০ মিনিটে ১,২০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হবে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে যে বেজিং এবং সাংহাইয়ের মধ্যে ১,২০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমকারী সুপারফাস্ট ম্যাগলেভ উচ্চগতির রেল বর্তমান সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার ভ্রমণ সময়কে কমিয়ে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় নামিয়ে নিয়ে এসেছে। ভারতে যদি ম্যাগলেভ প্রযুক্তি চালু করা হয়, তাহলে দিল্লি এবং কলকাতার মধ্যে যাত্রার সময় আড়ই ঘণ্টারও কম সময়ে হতে পারে। গত সপ্তাহে ১৭তম আধুনিক রেলওয়ে প্রদর্শনীতে ট্রেনটি উন্মোচন করা হয়েছে। সুপারসনিক এই ট্রেনটি মাত্র ৭ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাথায় পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার দেনা নিয়ে কাটছে জীবন, চিনে নিন বিশ্বের দরিদ্রতম ব্যক্তিকে
চীন ম্যাগলেভ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিপরীতমুখী চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করে ট্রেনকে ট্র্যাক থেকে উপরে তুলেছে। দেখে মনে হবে যেন ট্রেনটি ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার ফলে ট্র্যাকের সঙ্গে ট্রেন লাইনে ঘর্ষণ কমে যাচ্ছে। এর ফলে মসৃণ এবং দ্রুত চলাচলের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। জুন মাসে চীনের হুবেই প্রদেশের ডংহু ল্যাবরেটরিতে পরিচালিত সর্বশেষ পরীক্ষায়, ১.১ টনের ম্যাগলেভ ট্রেনটি ১,৯৬৮ ফুট লম্বা ট্র্যাকে মাত্র ৭ সেকেন্ডের মধ্যে ৪০৪ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে ছুটতে সক্ষম হয়েছে।

২০২৩ সালের একটি পরীক্ষায় ম্যাগলেভ প্রযুক্তির ব্যবহার করেই চীন ট্রেনের গতিকে ঘণ্টায় ৬২০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিল। একটি যাত্রীবাহী বিমানের গতিবেগ যেখানে ৫৫০ থেকে ৫৭৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা। পরীক্ষাটি একটি ভ্যাকুয়াম টিউবের ভিতরে পরিচালিত হয়েছিল। যা প্রায় বায়ুশূন্য অবস্থায় ছিল। এর ফলে টিউবের মধ্যে কোনও প্রতিরোধ তৈরি হয়নি যার জন্য ট্রেনের গতি কমতে পারে। ডংহু ল্যাবরেটরির ইঞ্জিনিয়াররা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ হাইস্পিড ট্র্যাকের সম্পূর্ণ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ফেলবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্লেনে ধূমপান করতেই তাণ্ডব, ১৭ ঘণ্টা ‘যুদ্ধক্ষেত্রে’ বন্দি রইলেন যাত্রীরা, বিমা্নের মধ্যে যা ঘটল
বিশ্বের দ্রুত গতির যে ট্রেনগুলি রয়েছে তার বেশির ভাগই রয়েছে চীনে। চীনে CRH380A Hexie নামে একটি বুলেট ট্রেন চলাচল করে, যা বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন। যার গতি ঘণ্টায় ৪৮৬ কিলোমিটার বা ৩০২ মাইল প্রতি ঘণ্টা। সাংহাই ম্যাগলেভ চীনের প্রধান শহর সাংহাইতে চলে। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রেন। এর গতি ঘণ্টায় ৪৬০ কিলোমিটার (২৮৬ মাইল প্রতি ঘণ্টা)। চীনের বুলেট ট্রেন CR450-এর সর্বোচ্চ গতি ৪৫৩ কিমি অথবা ২৮১ মাইল প্রতি ঘণ্টা। CR400 Fuxing চীনের আরও একটি বিখ্যাত বুলেট ট্রেন। এর সর্বোচ্চ গতি ৩৫০ কিমি (২১৭ মাইল) প্রতি ঘণ্টা।
শুধু চীন নয় জাপানের শিনকানসেন বুলেট ট্রেনের গতিও অনেক বেশী এবং এগুলি বিশ্বের দ্রুতগতির ট্রেনগুলির মধ্যে অন্যতম। জাপানের শিনকানসেন এইচ৫ বুলেট ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ৩২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
ভারতে বর্তমানে বুলেট ট্রেন তৈরির কাজ চলছে। গুজরাটে শুরু হবে ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন। বিলিমোরা এবং সুরাতের মাঝে চলবে এই ট্রেন। ট্র্যাক তৈরির কাজ চলছে জোর কদমেষ ২০২৬-র মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
