আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিমানে ধূমপান করে তাণ্ডব চালানো এক “উপদ্রবকারী” দম্পতির জন্য মাঝপথেই নামাতে হল বিমান। এর জেরে আমেরিকার মেইন রাজ্যের একটি বিমানবন্দরে প্রায় ১৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থায় কাটাতে হল শতাধিক যাত্রীকে। এই পরিস্থিতিকে এক যাত্রী ‘যুদ্ধক্ষেত্রের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ জুলাই, টিইউআই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট BY49-এ। বিমানটি মেক্সিকোর কানকুন থেকে উড়ে যাচ্ছিল লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। জানা গিয়েছে, ফ্লাইটে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যেই এক দম্পতি ধরা পড়েন বিমানের শৌচাগারে ধূমপান করতে গিয়ে। বিমানের পাইলট তাদের কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেন।

তাঁদের স্পষ্ট সতর্ক করে বলে দেন, এভাবে চললে বিমান মাঝপথে নামাতে বাধ্য হবেন। কিন্তু তারপরেও নিজেদের কাজ চালিয়ে যান দম্পতি। তবুও তারা ধূমপান চালিয়ে যান। এর পরেই, পাইলট প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর, রাত ৯:৩০ নাগাদ (স্থানীয় সময়) বিমানটি কানাডা সীমান্তের কাছে মেইনের ব্যাঙ্গোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামিয়ে দেন। বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেই দম্পতিকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মূল সমস্যা তখনই শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই বিমানের ক্রু সদস্যরা তাদের দায়িত্বের সময়সীমা অতিক্রম করে ফেলায় তারা আর লন্ডনের পথে যাত্রা চালাতে পারেননি। বিমানে থাকা ৬৬ বছর বয়সি ব্রিটিশ নাগরিক টেরি লরেন্স বলেন, ‘সবাই খুব বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল’।

জানা গিয়েছে, এরপরেও যাত্রীদেরকে বিমানে আরও পাঁচ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। পাশাপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনের জেরে যাত্রীদের বাইরে নামতে দেওয়া হয়নি। তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরের একটি সীমাবদ্ধ সামরিক অঞ্চলে। লরেন্স নামক ওই যাত্রী বলেন, ‘ওই লাউঞ্জ যেখানে তাদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল তা যেন এক যুদ্ধক্ষেত্রের মতো’। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, যাত্রীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঘুমোচ্ছেন, কেউ কেউ মেঝেতে এয়ারবেডে শুয়ে রয়েছেন।

লরেন্স বলেন, আমাদের অনেকটা শকুনদের মতো দেখতে লাগছিল। কে কোথায় বসবে, কে কী পাবে। শুধু সারি সারি বিছানা পড়েছিল। পুরো দৃশ্যটা ছিল এক যুদ্ধক্ষেত্রের লাউঞ্জের মতো’। জানা গিয়েছে, যাত্রীদের নিজেদের ব্যাগ এবং জিনিসপত্র ফেরত পেতে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি কোনও রকম খাবার বা জলও দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে, ওই বিমান সংস্থা ব্রিটেন থেকে একটি নতুন ক্রু টিম পাঠায়। অবশেষে ৯ জুলাই দুপুর ৩টা নাগাদ (স্থানীয় সময়) বিমান ব্যাঙ্গোর থেকে রওনা দেয় লন্ডনের উদ্দেশ্যে অবতরণের ১৭ ঘণ্টা পর। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার কারণে এই ডাইভারশন জরুরি ছিল, কারণ বিমানের মধ্যে ধূমপানের মতো ঘটনা ঘটে।