আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহাকাশে এখন চরকির মতো পাক খেয়ে চলেছেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। তিনি সেখানে থাকবে ১৪ দিন। সেখান থেকে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে শেয়ার করে চলেছেন। সেখানে তিনি যা বলেছেন তা শুনে সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছেন।
শুভাংশু জানিয়েছেন তিনি মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন সেটা সঠিক। তবে বইয়ের পাতা থেকে শুরু করে মহাকাশের চরিত্র একেবারে আলাদা। সেখানে এমন এক জগতের তিনি সাক্ষী হয়েছেন যে সেখান থেকে তিনি নিজেকে ধন্য বলে মনে করছেন। শুভাংশু জানিয়েছেন মহাকাশ পৃথিবী থেকে যতটা দেখা যায় তার তুলনায় কয়েক কোটি গুন বড়। সেখানে কোনও আদি বা অন্ত রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। কোথায় গিয়ে এই মহাকাশের অন্ধকার শেষ হয়েছে বা কোথা থেকে এটি শুরু হয়েছে তার কোনও হিসেব নেই।
শুক্লা বলেন, মহাকাশ নিয়ে একটি জীবন কম হয়ে যাবে। সেখানে প্রতিটি সময় ধরে মহাকাশ যেন সকলের কাছে বিরাট একটি রহস্যের সমান। এই রহস্য প্রতিটি সময় নতুন দিক সামনে নিয়ে এসেছে। তাই একমাত্র যারা পৃথিবীর বাইরে গিয়ে মহাকাশকে দেখেছেন তারাই এই পরিস্থিতি ভালভাবে বুঝতে পারবেন।
বৃহস্পতিবারই নাসা জানিয়ে দিয়েছে শুভাংশু সহ তার দল ১৪ জুলাই থেকে ফের পৃথিবীর দিকে নিজেদের যাত্রা শুরু করবে। সেই বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে নাসা। তাদেরকে ফের একবার প্রশান্ত মহাসাগরের বুকেই ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে তা একপ্রকার নিশ্চিত করেছে নাসা।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশ শুক্লা প্রথম ভারতীয় যিনি আইএসএস গিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি হলেন রাকেশ শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি মহাকাশে এতটা সময় কাটাবেন। রাকেশ শর্মা ১৯৮৪ সালে মহাকাশে গিয়েছিলেন।

ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে এখন রয়েছেন এক ভারতীয়। গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। বর্তমানে তিনি প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছেন। ধরা যেতে পারে শুভাংশু বর্তমানে আপনার মাথার ওপরেই রয়েছেন।
আইএসএস তৈরি করেছে আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপ, জাপান এবং কানাডা। এটিকে দেখতে অনেকটা ফুটবলের মতো। এটি পৃথিবীর ওপর ঘন্টায় ৪০০ কিলোমিটার বেগে ঘুরছে। ফলে এর গতি মহাকাশে রয়েছে ২৮ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। এটি পৃথিবীকে সারাদিনে ১৬ বার প্রদক্ষিণ করছে। ফলে এর ভিতরে থাকা মহাকাশচারীরা প্রতি ২৪ ঘন্টায় ১৬ টি সূর্যোদয় দেখতে পারছেন।
আরও পড়ুন: দূরপাল্লার যাত্রায় হঠাৎ করে ট্রেন থেমে যায় কেন, জানলে আকাশ থেকে পড়বেন
তবে এই গতিতে চলার পরও আপনি একে খালি চোখে দেখতে পারবেন। এটি ঠিক আপনি দেখতে পারবেন ঠিক তেমনভাবেই যেমন আপনি পৃথিবী থেকে চাঁদকে দেখা যায়। একে দেখতে হলে সূর্য ওঠার আগে বা সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে আপনি দেখতে পারেন। ফলে সেই সময় আপনি একে আকাশে উজ্জ্বল একটি নক্ষত্রের মতোই দেখতে পারবেন। তার কারণ সেই সময় এর ওপর সূর্যের আলো বিকিরণ করবে।
একে খালি চোখেই আপনি দেখতে পারবেন। এর উজ্জ্বল রং আপনি নিজের কাছের মানুষদেরও দেখাতে পারবেন। এখানে ভৌগলিক দিক থেকে দেখতে হলে আপনি কেরালা এবং দক্ষিণ ভারত থেকে বেশি করে এই যানটিকে দেখতে পারবেন। সেখানে টানা ৫ মিনিট ধরেই আপনি একে দেখতে পারবেন।
একে দেখতে হলে আপনার কোনও দূরবীনের দরকার হবে না। পরিষ্কার আকাশে আপনি অতি সহজেই একে দেখতে পারবেন। শুধু সঠিক সময় হলেই আপনি একে দেখতে পারবেন। তবে যত উঁচু গাছ বা বাড়ির ওপরে যাবেন ততই আরও ভালভাবে দেখতে পারবেন।
