ওজন কমাতে একেকজন একেক রকম পন্থা অবলম্বন করেন। কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাম ঝরান ট্রেডমিলে, আবার কড়া ডায়েট মেনে চলেন অনেকে। কারওর দ্রুত মেদ ঝরাতে রাতের খাবার না খাওয়ার প্রবণতাও চোখে পড়ে। ডিনার না খেলে শরীরে ক্যালোরি কম যায়, এমন ধারণা প্রচলিত রয়েছে। যদিও এই মতবাদে বিশ্বাসী নন পুষ্টিবিদরা। রাতের খাবার না খেলে সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, বরং ঠিক সময়ে ডিনার করলেই ওজন কমবে দ্রুত, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। আসলে ওজন কমানোর জন্য শুধু কী খাচ্ছেন তা নয়, কখন খাচ্ছেন তাও আপনার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হতে পারে।

রাতে খুব দেরিতে খাওয়ার পরিণাম ভয়ানক হতে পারে। আসলে শরীরের নিজস্ব জৈবিক ঘড়ি বা সার্কেডিয়ান রিদম অনুযায়ী সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের মেটাবলিজম কমে যেতে থাকে। অর্থাৎ রাতের খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং শরীরে সহজেই চর্বি হিসেবে জমে যায়। সেক্ষেত্রে যাঁরা রাত ৯টা-১০টার পর ডিনার করেন, তাঁদের ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি হজম হবে, শরীর তত ভালভাবে ঘুমের সময় পুনর্গঠন করতে পারবে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুনঃ মোমের মতো গলবে খারাপ কোলেস্টেরল, হার্ট থাকবে একেবারে ফিট! এই টক ফলের জাদুতেই বৃদ্ধ বয়সেও থাকবেন সুস্থ

রাতে ঠিক কখন খাবেন? বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, সন্ধে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়াই সবচেয়ে ভাল। ঘুমানোর অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করতে হবে, যাতে হজমের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। যদি অফিস বা কাজের কারণে দেরি হয়ে যায়, তাহলে ভারী খাবার নয়, হালকা ও পুষ্টিকর কিছু খেতে পারেন। যেমন স্যুপ, সেদ্ধ সবজি, দই বা স্যালাড।

ওজন কমানোর আরও কিছু টিপস

*সকালে প্রোটিনসমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট ও রাতে হালকা ডিনার রাখুন।
*দিনে পর্যাপ্ত জল পান করুন।
*রাতে ঘুমানোর আগে ভারী স্ন্যাকস, মিষ্টি বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

বিজ্ঞানীরা বলেন, রাতের দেরি করে খাওয়ার ফলে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ফ্যাট স্টোরেজকে বাড়ায়। আবার আগে খাওয়ার ফলে শরীর রাতে শক্তি ব্যবহার না করে ফ্যাট বার্নিং মোডে চলে যায়। ফলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়। অর্থাৎ ওজন কমাতে কেবল ডায়েট নয়,সময়ই আসল ‘ওষুধ’। নিয়মিত রাতের খাবার আগে খাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের প্রাকৃতিক ছন্দকে সক্রিয় রাখে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খান, শরীরকে দিন বিশ্রামের সময়। তাহলেই জমতে পারবে না মেদ, বজায় থাকবে ফিটনেস।