দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারকে শুধুমাত্র ধূমপানের সঙ্গে যুক্ত করে দেখা হয়ে এসেছে। কিন্তু ধূমপায়ী নন মানেই আপনি ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে মুক্ত, এ ধারণা পুরোপুরি ভ্রান্ত। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বর্তমানে ধূমপায়ী না হলেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা একে “নীরব মহামারী” বলে উল্লেখ করছেন। চিকিৎসকদের মতে, সময় থাকতে সতর্ক হতে হবে, উপসর্গ অবহেলা করলে বড় বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে সচেতনতা ও প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলেই সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বর্তমানে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ কখনোই সিগারেট স্পর্শ করেননি। তবুও তারা আক্রান্ত হচ্ছেন মূলত পরিবেশ দূষণ, কারখানা বা বাড়ির ক্ষতিকর রাসায়নিক ধোঁয়া, বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস, এমনকী নিয়মিত অতিরিক্ত প্রসেসড খাবারের প্রভাবে। চিকিৎসকরা বলছেন, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই রোগ দ্রুত বাড়ছে। এশিয়ান দেশগুলিতে এর হার বেশি। প্রধানত যে ক্যানসার ধরা পড়ছে, তা হল এডিনোকারসিনোমা, যা ফুসফুস ক্যানসারের অন্যতম সাধারণ ধরন।
আরও পড়ুনঃ বর্ষায় ঘন ঘন গোপনাঙ্গের সংক্রমণে ভুগছেন? কোন উপায়ে থাকবেন সুস্থ? জেনে নিন ডাঃ বাণী কুমার মিত্রর পরামর্শ
প্রাথমিকভাবে কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন
- শুকনো কাশিঃ ফুসফুসে ক্যানসারের অন্যতম একটি উপসর্গ হল কাশি । সেখানে শুকনো অথবা কফের সমস্যা থাকতেই পারে । যদি প্রায় তিন মাস টানা কাশি হতে থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও আচমকাই গলার স্বর ভেঙে যাওয়াও একটি উপসর্গ ।
- শ্বাসকষ্টঃ ফুসফুসের ক্যানসার হলে রোগীর শ্বাস নিতে অসুবিঝা হয়।
- সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়াঃ সামান্য কাজ করলেই ক্লান্ত হয়ে পড়াও ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণ।
- বুকের ব্যথা বা অস্বস্তিঃ বুকে ব্যথা, নাগাড়ে ব্যথা থেকে যাওয়া। বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ।
- এই উপসর্গগুলো অনেক সময় সাধারণ সর্দি-কাশি বা অ্যাজমার মতো মনে হলেও, এগুলোই হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক সতর্কবার্তা।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুসফুস ক্যানসার আটকাতে পরিবেশ দূষণ কমানোর দিকে জোর দিতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। ধূমপান না করলেও যে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব, সেই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।
