একটানা গরমের পর বর্ষাকাল খানিকটা স্বস্তি নিয়ে আসে বটে। কিন্তু বৃষ্টির মরশুমেও বাড়ে আর্দ্রতা। পিছু ছাড়ে না প্যাচপ্যাচে গরম। সঙ্গে এই সময়ে নানা অসুখবিসুখের প্রকোপ দেখা দেয়। জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে যত রকম উটকো রোগ সুযোগ পেলেই ঘিরে ধরে। বিশেষ করে মেয়েদের বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন হয়। অন্যান্য অসুখের সঙ্গে মেয়েরা গোপনাঙ্গের সংক্রমণে ভোগেন। বর্ষায় কেন এই সমস্যা বাড়ে? কীভাবেই বা গোপনাঙ্গের সংক্রণ ঠেকাবেন? সেবিষয়ে জানালেন আভা সার্জি সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ কনসালটেন্ট ড. বাণী কুমার মিত্র।

আসলে বর্ষায় আর্দ্রতা ও ভেজা পরিবেশ, তাপমাত্রার তারতম্য এবং যোনির পিএইচ-এ হেরফের-এই সবকিছুতে ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাক তৈরি হতে সময় লাগে না। সামান্য অসতর্ক হলেই বর্ষায় মেয়েদের ইউরিনারি ট্র্যাক্ট সংক্রমণ, রিপ্রোডাক্টিভ ট্র্যাক্ট সংক্রমণ এবং অন্যান্য স্ত্রীরোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। যদিও শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তনই নয়, এই সময়ে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে পরিচ্ছন্নতা না মানা, খুব বেশি যত্ন নিতে নানা বাধার সম্মুখীন হন। 

আরও পড়ুনঃ হেঁশেলের পরিচিত এই জিনিসে লুকিয়ে তারুণ্যের চাবিকাঠি! শুধু খেলেই হবে না, মাখলেও রাতারাতি বাড়বে ত্বকের জৌলুস

বর্ষাকাল শরীরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতাকে জটিল করে তোলে। ভেজা কাপড়ে দীর্ঘ সময় থাকা, সিনথেটিক অন্তর্বাস ব্যবহার করা বা অতিরিক্ত রাসায়নিকযুক্ত সাবান মাখা, প্রাকৃতিক যোনির পিএইচ নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস, ক্যান্ডিডিয়াসিস বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। শহর বা গ্রামাঞ্চল—দুই জায়গাতেই কর্মজীবী মহিলারা এবং যারা নিয়মিত বাইরে থাকেন, তাঁদের জন্য ভেজা কাপড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকা কিংবা অস্বাস্থ্যকর পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করা ঝুঁকি আরও বাড়ায়। 

বর্ষাকালে প্রধান উদ্বেগের মধ্যে একটি হল যে অনেক মহিলা বেশিরভাগ সময়ে গোপনাঙ্গে সংক্রমণের লক্ষণ বুঝতে পারেন না। প্রাথমিকভাবে চুলকানি, অস্বাভাবিক স্রাব বা সামান্য অস্বস্তির মতো লক্ষণ যতক্ষণ না তীব্র পর্যায়ে পৌঁছে যায় ততক্ষণ অনেকেই উপেক্ষা করেন। ফলে সংক্রমণ আরও জটিল আকার ধারণ করে। 

স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সংক্রমণ এড়াতে কী কী করা উচিত

* নিয়মিত সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। 

* আরামদায়ক, পোশাক, অন্তর্বাস ব্যবহার করুন।

* গোপনাঙ্গে সুগন্ধযুক্ত বা রাসায়নিকযুক্ত পণ্য ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

আরও পড়ুনঃ হাজার জটিল অসুখ বশে রাখতে এই সবজি একাই একশো! নিয়ম করে খেলে বেঁচে যাবে দামি ওষুধের খরচ

* ঋতুস্রাবের সময় নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্যানিটারি ন্যাপকিন করা উচিত। এতে শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকবে।

* সারাদিন শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে হবে। প্রোবায়োটিক এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 

* গোপনাঙ্গে যে কোনও অস্বস্তি হলে নিজে নিজে ওষুধ খাবেন। এতে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। বরং প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।