আজকাল ওয়েবডেস্কঃ 'ডিম আগে না মুরগি আগে?' যদি কেউ বলেন ডিম আগে, তাহলে প্রশ্ন আসে ডিম কোথা থেকে এল? আবার মুরগি আগে আসার পক্ষে মত দিলে, প্রশ্ন আসে যে মুরগির জন্ম হল কোথা থেকে? যুগ যুগ ধরে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মরিয়া মানুষ! তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে দীর্ঘ! এমনকী অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টা পরিণত হয়েছে ঠাট্টার অলঙ্কারেও। আসল উত্তরের সন্ধানে ঘেঁটে ঘ হয়েছেন আট থেকে আশি। অবশেষে সেই ধাঁধাইরই মিলল সমাধান।
শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে ডিমের আগে এসেছিল মুরগি। উত্তরের নেপথ্যে তাঁদের যুক্তি, ডিমের খোসায় ওভোক্লেইডিন-১৭ (ওসি-১৭) নামক একটি নির্দিষ্ট প্রোটিন থাকে, যা শুধুমাত্র মুরগির ডিম্বাশয়ে উৎপাদিত হয়। অন্যভাবে বললে, মুরগি ছাড়া ডিমের খোসা তৈরির কোনও জৈবিক প্রক্রিয়া নেই। তাই মুরগির ডিম তখনই থাকা সম্ভব, যখন মুরগি আগে থেকে রয়েছে।
বিজ্ঞানীদের একপক্ষ মনে করেন, আগে পৃথিবীতে মুরগির প্রজাতি এমন ছিল না। সেসময় মানুষের মতোই সন্তান প্রসব করত মুরগিও। কয়েক লাখ বছর আগে মুরগির পূর্বপুরুষরা ডিম পাড়ত। যদিও এখন বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বকে খারিজ করেছেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্য, মুরগির পূর্বপুরুষরা সন্তানের জন্ম দিত। আসলে গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে ডিম পাড়া প্রাণীর প্রজাতি সন্তান জন্মদানকারী প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়েছে। এই ধরনের প্রজাতি উভয় ক্ষেত্রেই সক্ষম ছিল। তারা ডিমও পাড়তে পারে, কিন্তু ডিম পাড়ার বিষয়টি পরে ঘটেছিল অর্থাৎ মুরগি আগে থেকেই উপস্থিত ছিল।
গবেষকরা যুক্তি দিয়েছেন যে বর্ধিত ভ্রূণ ধরে রাখার কারণেই হয় উর্বরতার তারতম্য। পাখি, কুমির এবং কচ্ছপ এমন ডিম পাড়ে যেখানে ভ্রূণ তৈরি হয় না, সেখানে কিছু প্রাণী আছে যারা ভ্রূণের ভেতর থেকে বিকাশের সঙ্গে ডিম পাড়ে। যদিও সাপ এবং টিকটিকি ডিম পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তানও জন্ম দিতে পারে। কারণ তাদের ডিম ফোটার প্রয়োজন হয় না। ফলে সবমিলিয়ে এত দিনের অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর অবশেষে হাতের সামনে এল বলাই যায়।
