শরীরের আর পাঁচটা অঙ্গের মতো দাঁতের প্রতি অনেকেই খুব একটা নজর দেন না। বিশেষ করে টুথব্রাশ বদলানোর ক্ষেত্রে গাফিলতির শেষ নেই। দাঁতের জেল্লা নষ্ট হয়ে গেলে কিংবা দাঁতের ব্যথায় আমরা চিন্তায় পড়ে যাই বটে! কিন্তু টুথব্রাশ নিয়ে উদাসীন থাকি। ব্রাশ একেবারে ব্যবহারের অযোগ্য না হওয়া পর্যন্ত তা বদলানোর কথা মাথায় আসে না। আসলে খুব কম মানুষই জানেন টুথব্রাশ কতদিন ব্যবহার করা নিরাপদ। চিকিৎসকরা বলছেন, পুরনো টুথব্রাশ শুধু দাঁতের ক্ষতি করে না, জীবাণুর আস্তানায় পরিণত হয়। এমনকী টুথব্রাশ নিয়মিত বদলানো না হলে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। পুরনো টুথব্রাশ ব্যবহার করা দাঁতের অযত্নের অন্যতম বড় কারণ হতে পারে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই দামি পেস্ট কেনেন। ভাবেন, তাতেই বুঝি সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন। তবে এই ধারণা ঠিক নয়। চিকিৎসকদের একাংশের মত, দাঁত এবং মুখ পরিষ্কারের ক্ষেত্রে পেস্টের ভূমিকা খুবই নগণ্য। তাই এই নিয়ে বেশি মাতামাতি করে লাভ নেই। বরং ব্রাশ করার সময় অল্প পরিমাণে পেস্ট ব্যবহার করুন। কারণ, বেশি পেস্ট নিলে ব্রাশের ঘর্ষণ ক্ষমতা কমে যায়। যার ফলে দাঁতের মাঝ থেকে প্লাক বের হতে চায় না। প্রতিদিন রাতে এবং সকালে উঠে ব্রাশ করা জরুরি। আর ব্রাশ করতে হবে মাড়ি থেকে দাঁতের দিকে এবং দাঁত থেকে মাড়ির দিকে। 

আরও পড়ুনঃ দুঃস্বপ্নে রাত কাটে? অজান্তেই এগোচ্ছেন অকালমৃত্যুর পথে!নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর দাবি

তবে শুধু ব্রাশ করলেই তো হল না, নির্দিষ্ট সময় অন্তর টুথব্রাশ বদলে ফেলাও জরুরি। ঠিক কতদিন পর টুথব্রাশ বদলানো উচিত? দন্ত চিকিৎসকরা মতে, ‘৩ মাসের নিয়ম’ মেনে টুথব্রাশ বদলানো সুস্থ দাঁত ও মাড়ির জন্য অপরিহার্য। প্রতি ৩ থেকে ৪ মাস অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন না করলে শুধু দাঁতের সমস্যা নয়, সংক্রমণ ও অস্বস্তিও বাড়তে পারে। আসলে এই সময়ের পর ব্রাশের আঁশ (ব্রিসল্স) নরম হয়ে যায় অথবা ফেটে যায়, ফলে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা প্লাক ও জীবাণু কার্যকরভাবে পরিষ্কার হয় না। কোনও অসুস্থতা, বিশেষ করে ভাইরাল রোগ যেমন জ্বর, কাশি থেকে সেরে ওঠার পর টুথব্রাশ বদলে ফেলা উচিত। সেক্ষেত্রে ২-৩ মাসের আগেই ব্রাস বদলে ফেলুন। চেবানোর স্বভাব থাকলে ব্রাশ এক মাসেও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ব্রাশের ব্রিসল্সগুলো ভাল আছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া জরুরি। 

পুরোনো টুথব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁতে প্লাক জমে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। মাড়িতে প্রদাহ বা জিঙ্গিভাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে। পুরোনো ব্রাশে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস জমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। মুখের দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে।


টুথব্রাশ কীভাবে যত্নে রাখবেন

*ব্রাশ প্রতিবার ব্যবহার শেষে পরিষ্কার জলে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

*উলম্ব অবস্থায় বাতাস চলাচল হয় এমন জায়গায় শুকোতে দিন

*টুথব্রাশ কখনওই কারও সঙ্গে ভাগ করবেন না।

*প্লাস্টিক কভার দিয়ে ভিজে অবস্থায় ঢেকে রাখবেন না, এতে জীবাণু দ্রুত বাড়ে।