সময়ের সঙ্গে বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্বজুড়ে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ উর্ধ্বমুখী। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, অনিয়মিত জীবনধারা, শরীরচর্চার অভাব সহ বিভিন্ন কারণে অল্প বয়সিদের মধ্যেও বাসা বাঁধছে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ। হৃদরোগের মারণ অসুখের অন্যতম কারণ হল ধমনীর ব্লকেজ। সাধারণত আমরা মনে করি এই সমস্যা শুধু হার্ট বা মস্তিষ্কের রক্তনালিতেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু শরীরের অন্য অংশেও এর প্রভাব পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে শরীরে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যায়। বিশেষ করে হাত ও বাহুতে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে শরীর কয়েকটি স্পষ্ট সংকেত পাঠায়, যেগুলো দ্রুত চিহ্নিত করতে পারলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও ফুলে রয়েছে পেট? নেপথ্যের তিন ‘খলনায়ক’-কে শায়েস্তা করলেই কমবে পেটফাঁপা

১. হঠাৎ তীব্র হাতের ব্যথাঃ হাত হঠাৎ করেই প্রচণ্ড ব্যথা করতে পারে। এই ব্যথা গভীর, ধারালো বা অসহনীয় হতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, অনেক সময় এটি ক্রিটিক্যাল লিম্ব ইস্কেমিয়া নামে গুরুতর পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়, যখন রক্তপ্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এটি উপেক্ষা করলে বড় বিপদ হতে পারে। 

২. আঙুলের রং পরিবর্তনঃ রক্ত প্রবাহ কমে গেলে আঙুল স্বাভাবিক গোলাপি রঙ হারিয়ে নীলচে, সাদাটে বা বেগুনি আভা ধারণ করতে পারে। একে অ্যাক্রোসায়ানোসিস বলা হয়। এই রং পরিবর্তন রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার স্পষ্ট লক্ষণ।

৩. বাহু বা নিচের হাতে ক্লান্তি ও টান ধরাঃ হাতের পেশি যথেষ্ট অক্সিজেন না পেলে কাজের সময় বাহুতে ভারীভাব, দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া কিংবা টান ধরার অনুভূতি হতে পারে। হাঁটাহাঁটি বা কিছু কাজ করলেই এই উপসর্গ বাড়ে।

৪. নখের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যাওয়াঃ রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হলে ত্বক ও নখ যথেষ্ট পুষ্টি পায় না। ফলে নখ স্বাভাবিকের তুলনায় ধীরে বাড়ে, ভঙ্গুর হয়ে যায় বা রং পরিবর্তন হয়। এই লক্ষণও উপেক্ষা করা উচিত নয়, কারণ এটি শরীরের রক্তনালীর সমস্যার আভাস দেয়।

৫. পেশির দুর্বলতাঃ হাতে দীর্ঘ সময় রক্ত চলাচল না হলে ধীরে ধীরে পেশির শক্তি কমতে থাকে। গ্রিপ বা ধরার ক্ষমতা কমে যাওয়া, সহজ কাজেও দুর্বলতা অনুভব করা কিংবা সময়ের সঙ্গে পেশির ক্ষয় হওয়া — সবই ব্লকেজের গুরুতর লক্ষণ হতে পারে। 

৬. হাত ঠান্ডা হওয়াঃ যদি আপনার হাত ঠান্ডা থাকে, তাহলে তা হৃদযন্ত্রের কারণে রক্ত সঞ্চালনের দুর্বলতার লক্ষণ হতে পারে। যখন হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখন রক্ত হাত এবং পায়ের মতো অঙ্গ থেকে দূরে যায়। ফলে হাত এবং পা ঠান্ডা, ঘামতে শুরু করে। 

৭. হাত ফোলাঃ হাত অথবা পা ফুলে যাওয়া এডিমা নামেও পরিচিত। এটি হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতার লক্ষণ হতে পারে। যখন হৃদপিণ্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়, তখন হাত ও পায়ে তরল জমা হতে থাকে। ফলে ফোলাভাব দেখা দেয়।