আজকাল ওয়েবডেস্ক: অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে জিবোর্ড দীর্ঘদিন ধরেই একটি জনপ্রিয় কীবোর্ড অ্যাপ। গুগলের ডিফল্ট কীবোর্ড হিসেবে এটি ব্যবহারের সহজতা, নির্ভুল টাইপিং এবং নানা সুবিধার কারণে সবসময় এগিয়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি জানা গেছে, গুগল জিবোর্ডে বেশ কয়েকটি নতুন ফিচার পরীক্ষা করছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত রাইটিং টুলস, যা ব্যবহারকারীর টাইপিং অভিজ্ঞতাকে এক নতুন স্তরে নিয়ে যেতে পারে।
অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি–এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, জিবোর্ডের সর্বশেষ বেটা ভার্সনে যুক্ত হয়েছে একটি আকর্ষণীয় ফিচার—“ফ্লিক কিজ টু এন্টার সিম্বলস”। এই ফিচার চালু করলে ব্যবহারকারীরা কীবোর্ডের কোনও বর্ণে আঙুল দিয়ে নিচের দিকে টানলেই সেই বর্ণের সঙ্গে যুক্ত প্রতীক বা সিম্বল ইনপুট হবে। এটি অনেকটা অ্যাপলের আইপ্যাড কীবোর্ডের মতো কাজ করে। প্রথমদিকে অভ্যস্ত হতে কিছুটা কষ্ট হলেও, একবার রপ্ত হয়ে গেলে দ্রুত প্রতীক টাইপ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ডাইনোরাও একে দেখে ভয় পেত, চিনে নিন এই ঘাতককে
এছাড়া, ছোট সাইজের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের প্রেক্ষাপটে জিবোর্ড নতুন একটি সেটিংস যোগ করছে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী ঠিক করতে পারবেন, পাসওয়ার্ড টাইপ করার সময় আলাদা নাম্বার রো দেখাতে চান কি না। বড় স্ক্রিনের ফোনে এটি ততটা কার্যকর নাও হতে পারে, তবে পিক্সেল ৯, স্যামসাং গ্যালাক্সি S25 বা ওয়ানপ্লাস ১৩–এর মতো কমপ্যাক্ট ডিভাইসে এটি নিঃসন্দেহে স্ক্রিন স্পেস বাঁচাতে সাহায্য করবে।
সবচেয়ে আলোচিত আপডেট নিঃসন্দেহে এআই রাইটিং টুলস। গুগল গত কিছুদিন ধরে এই ফিচারটি পরীক্ষা করছে। এখন ব্যবহারকারীরা নিজেদের মতো করে একটি প্রম্পট লিখে দিতে পারবেন, যা এআই–কে জানাবে তারা কী ধরনের লেখা চান বা কী কাজ করতে বলছেন। অর্থাৎ, জিবোর্ড শুধু শব্দ সাজিয়ে দেবে না, বরং ব্যবহারকারীর নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন টেক্সটও তৈরি করতে পারবে। কাজেই চ্যাট, ইমেইল কিংবা কনটেন্ট লেখার সময় এটি হয়ে উঠবে এক শক্তিশালী সহায়ক।
উল্লেখযোগ্য যে, চলতি বছরের শুরুর দিকে গুগল যখন জিবোর্ডে গোলাকার ও পিল-শেপড কী পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়, তখন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রবল অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। অনেকেই বলেছিলেন, নতুন ডিজাইন টাইপিং–এর সুবিধা কমিয়ে দিচ্ছে। এবার গুগল সেই প্রতিক্রিয়ার প্রতি সাড়া দিয়েছে। নতুন আপডেটে কীবোর্ড কী–এর আকৃতি ব্যবহারকারীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। ফলে, যিনি প্রচলিত আয়তাকার ব্যাকগ্রাউন্ডে স্বচ্ছন্দ, তিনি সেটিই বেছে নিতে পারবেন। আবার যারা নতুন ডিজাইন পছন্দ করেন, তারাও চাইলে ব্যবহার করতে পারবেন।
এখানে মনে রাখা দরকার, এসব ফিচার এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তাই সব ব্যবহারকারীর হাতে একসঙ্গে পৌঁছাবে না। গুগল ধাপে ধাপে এগুলো চালু করবে এবং সফল পরীক্ষার পর সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সব মিলিয়ে বলা যায়, জিবোর্ডের এই নতুন পরিবর্তনগুলো কেবলমাত্র টাইপিং–এর অভিজ্ঞতাকে দ্রুততর বা আরামদায়ক করবে না, বরং এআই–এর মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি বা এডিট করার মতো জটিল কাজেও সাহায্য করবে। ফলে, ভবিষ্যতে জিবোর্ড আর শুধু একটি কীবোর্ড অ্যাপ নয়, বরং এক পূর্ণাঙ্গ রাইটিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে জায়গা করে নিতে পারে।
