আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার থেকে একেবারে উত্তাল পরিস্থিতি, মঙ্গলে কার্যত পুড়ে খাক কাঠমাণ্ডু। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে দক্ষিণ এশিয়ায়। অন্যদিকে কেউ কেউ দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাচ্ছেন। সহজ অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ভূরাজনীতির সমীকরণ। যদিও নজরে নেপাল হলেও, কেবল নেপালই নয়। এই মুহূর্তে আরও একটি দেশ উত্তাল বিক্ষোভে। দেশের নানা প্রান্তে চলছে স্লোগান, প্রতিবাদ। কয়েকঘণ্টায় গ্রেপ্তার বহু।
ঘটনাস্থল ফ্রান্স। নেপালের পথে প্রান্তরের মতোই, প্যারিস, রেনেস, টুলুজ, মার্সেইয়, লিওঁতেও এখন হাজার কণ্ঠ। দাবি, স্লোগান, চিৎকার। বুধবার প্যারিস এবং ফ্রান্সের অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে, আগুন ধরিয়ে দেয়, পরস্থিতি হাতের বাইরে গেলে নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে পুলিশ। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে। বিক্ষোভের কারণ? রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর উপর চাপ তৈরি। মূল বিক্ষোভ তাঁকে ঘিরেই।
আরও পড়ুন: সংবিধান সংশোধন থেকে শুরু করে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, আর কী দাবি নেপালের জেন জি
দেশব্যাপী ১০ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ শুরু করেন হাজার হাজার মানুষ। এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচির তাঁরা নাম দিয়েছেন 'ব্লক এভরিথিং'। কেন এই প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। পরিস্থিতির দিকে তাকালে সহজে অনুমেয় ফ্রান্স কমবেশি জর্জরিত একাধিক সমস্যায়। তালিকায় অবশ্যই রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক অসন্তোষ, অর্থনৈতিক উদ্বেগ। যদিও ব্লক এভরিথিং-এ এই সবকিছু পুঞ্জীভূত রাগের কারণ হয়ে থাকলেও, ১০ তারিখের প্রতিবাদ বিক্ষোভের মূল লক্ষ্য ম্যাক্রোঁর উপরে চাপ তৈরি।
????#BREAKING: At this time, absolute chaos is erupting across France as thousands of protesters flood the streets, clashing with police and rioting in opposition to the government’s economic policies. pic.twitter.com/9PG9GDW0hy
— R A W S A L E R T S (@rawsalerts)Tweet by @rawsalerts
ম্যাক্রোঁর উপর চাপ কেন? প্রতিবাদীদের দাবি, প্রেসিডেন্টের ব্যর্থতার মাশুল গুনছে ফ্রান্স। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য ফ্রান্সের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। গত এক বছরে ফ্রান্স বারে বারে বদল দেখেছে প্রধানমন্ত্রীর পদে। মঙ্গলেই আস্থাভোটে হেরে গিয়েছেন ফ্রাঁসোয়া বায়রু। তারপরেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ খোয়ান। বুধে নয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন সেবাস্টিয়ান লেকর্নু। বারে বারে প্রধানমন্ত্রী বদল-সহ একাধিক কারণে দেশবাসীর যাবতীয় ক্ষোভ প্রেসিডেন্টের উপর পড়েছে।
তবে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লেও কঠিন হাতে দমন করার চেষ্টা চালিয়েছে প্রশাসন। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত তথ্য, অন্তত ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেইলউ জানিয়েছেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রেনেস-এ একটি বাসে আগুন লাগানো হয়েছে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি বিদ্যুৎ লাইনের ক্ষতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করেন যে বিক্ষোভকারীরা 'বিদ্রোহের পরিবেশ' তৈরি করার চেষ্টা করছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, অস্থিরতার মধ্যে কমপক্ষে ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন যে ফ্রান্স জুড়ে প্রায় ৮০,০০০ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬,০০০ প্যারিসে মোতায়েন করা হয়েছে। ফ্রান্সের ব্যাপক অস্থিরতার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে বিক্ষোভকারীদের আবর্জনা পোড়ানো, ডাস্টবিন নিক্ষেপ এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে।
