আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে সম্মান জানিয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করল রাশিয়া। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। মস্কোর সঙ্গে তেল-বাণিজ্যে জড়ালে একই পরিণতি হতে পারে, অন্যান্য দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ভারত আগেই এই হুঙ্কারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। এবার একই পথের পথিক রাশিয়াও। রবিবার মস্কোর তরফে স্পষ্ট বার্তা যে, নয়াদিল্লির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক "সময়-পরীক্ষিত" এবং "স্থিরভাবে" এগিয়ে চলেছে। পুতিন বাহিনীর পাল্টা হুঁশিয়ারি, ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক বিঘ্নিত করার যে কোনও প্রচেষ্টা "ব্যর্থ হওয়ার জন্য নির্ধারিত।"

রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ, রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটি-কে জানিয়েছে- মস্কো এবং দিল্লির মধ্যে সম্পর্ক "স্থির এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে" এবং "এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোনও প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।"

আরটি-র প্রশ্নের জবাবে জারি করা মন্ত্রকের বিবৃতিতে, বহিরাগত হুমকি (মার্কিন বাড়তি শুল্ক ও ন্যাটো সদস্য দেশগুলির চাপ)  এবং সমালোচনার মুখেও রাশিয়ার সঙ্গে দিল্লির অংশীদারিত্বের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে। রুশ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, "সত্যি বলতে, অন্য কিছু কল্পনা করা কঠিন হবে।" 

রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের মতে, দিল্লির দৃষ্টিভঙ্গি "দীর্ঘস্থায়ী রাশিয়া-ভারত বন্ধুত্বের চেতনা এবং ঐতিহ্যের" উপর ভিত্তি করে এবং "আন্তর্জাতিক বিষয়ে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন" এর প্রতিনিধিত্ব করে। মস্কো জোর দিয়ে বলেছে যে, অংশীদারিত্ব "সার্বভৌমত্বের সর্বোচ্চ মূল্য এবং জাতীয় স্বার্থের প্রাধান্য"-কে অগ্রাধিকার দেয়। রুশ প্রশানের কর্তাদের যুক্তি, এই দৃষ্টিভঙ্গি "নির্ভরযোগ্য, অনুমানযোগ্য এবং সত্যিকার অর্থে কৌশলগত" সম্পর্ককে সমর্থন করে।

দুই দেশ- অসামরিক ও সামরিক উৎপাদন, মানববাহী মহাকাশ অভিযান, পারমাণবিক শক্তি এবং রাশিয়ান তেল অনুসন্ধানে ভারতীয় বিনিয়োগের যৌথ প্রকল্পে জড়িত। সেদেশের বিদেশমন্ত্রক নতুন অর্থপ্রদান ব্যবস্থা বিকাশ, জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বিকল্প পরিবহন ও সরবরাহ রুট বৃদ্ধিতে যৌথ প্রচেষ্টার উপরও জোর দিয়েছে।

গত মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ ভারতীয় পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ২৫ শতাংশ বেস ট্যারিফ এবং রাশিয়া থেকে তেল ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার জন্য ভারতের ক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত 'জরিমানা'। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে পরোক্ষভাবে ইউক্রেন সংঘাতে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ করেছে। তবে ভারত বরাবরই সেই অভিযোগ 'অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অনৈতিক' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার মধ্যেই ওযাশিংটনের তরফে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আলোচনা পুনরায় শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়। কিন্তু, ভারত কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের উপর ছাড় দিতে অস্বীকার করেছে। 

আরও পড়ুন-  দূষণে জর্জরিত এই দেশের আকাশ হঠাৎই স্বচ্ছ নীল! দূষণ দমনে বিস্ময়কর সাফল্য এই দেশের