আজকাল ওয়েবডেস্ক: সমলিঙ্গে বিবাহে স্বীকৃতি দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তবে সমকামী যুগলদের নিজস্ব পরিবার গড়ার অধিকার রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। এই ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণটি দিয়েছেন বিচারপতি জি আর স্বামীনাথন ও ভি লক্ষ্মীনারায়ণনের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতিদের মতে 'পরিবার' শব্দটিকে বিস্তৃত অর্থে বোঝা উচিত। ২৫ বছর বয়সি এক সমকামী তরুণীকে তাঁর পরিবারের জোর জবরদস্তি থেকে মুক্তি দিয়ে এই রায় দেওয়া হয়েছে।
২৫ বছর বয়সী এক মহিলার হয়ে অন্য এক মহিলা আদালতে হাজির হয়ে তাঁর সঙ্গীকে পরিবার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য একটি রিট আবেদন করেন। তার শুনানি হয় বিচারপতি জি আর স্বামীনাথন ও ভি লক্ষ্মীনারায়ণনের ডিভিশন বেঞ্চে। আবেদনকারীর বন্ধুর বয়ান উল্লে খরে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, "তিনি (আবেদনকারী মহিলার সঙ্গী) আদালতে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তিনি আবেদনকারীর সঙ্গেই যেতে চান। তিনি অভিযোগটি নিশ্চিত করেছেন যে, তাঁর জন্মদাতা পরিবার তাঁকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রেখেছে। মনে হচ্ছে তাকে জোর করে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং মারধর করা হয়েছে। তিনি আমাদের বলেছেন যে তাঁর জন্মদাতা পরিবারের সদস্যরা তাঁকে কিছু নির্দিষ্ট রীতিনীতি পালন করতে বাধ্য করেছে যাতে সে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এমনকি তিনি তাঁর জীবনের ঝুঁকির আশঙ্কাও করেছিলেন। রিট পিটিশনের সমর্থনে দাখিল করা হলফনামায়, আবেদনকারী কোথাও আটক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রকৃত প্রকৃতি বর্ণনা করেননি। এমনকি পুলিশের কাছে করা অভিযোগেও, আবেদনকারী নিজেকে আটক ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে অভিহিত করেছেন। আমরা তাঁর পক্ষ থেকে দ্বিধা বুঝতে পারি।"
আদালত আরও বলেছে যে, "যদিও সুপ্রিয়া চক্রবর্তী, সুপ্রিম চক্রবর্তী বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া (সুপ্রিম কোর্ট) সমলিঙ্গের দম্পতিদের মধ্যে বিবাহকে বৈধতা নাও দিতে পারে, তারা খুব ভালোভাবে একটি পরিবার গঠন করতে পারে। পরিবার গঠনের একমাত্র উপায় বিয়ে নয়।"
আদালত বলেছে, "নির্বাচিত পরিবার ধারণাটি এখন LGBTQIA আইনশাস্ত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং স্বীকৃত।" আদালতের মতে, আবেদনকারী এবং আটক ব্যক্তি খুব ভালভাবে একটি পরিবার গঠন করতে পারেন।
এছাড়া ওই শুনানিতে 'Queer' শব্দ নিয়েও তীব্র আপত্তি জানিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের মতে, "Queer শব্দটি অপমানজনক ও বিভ্রান্তিকর। অভিধান অনুযায়ী queer মানে অদ্ভুত বা অস্বাভাবিক, কিন্তু সমকামীতা তো অস্বাভাবিক নয়। সমকামীদের গোষ্ঠীর কাছ থেকে এমন কোনও অভিযোগ পেলে পুলিশ এবং সরকারপক্ষের উচিত দ্রুত, যথাযথ এবং সংবেদনশীল পদক্ষেপ করা।"
