মিল্টন সেন, হুগলি, ১৯ ডিসেম্বর: হ্যান্ডবলের ইতিহাসে এই প্রথম। জাতীয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠল বাংলা দল। দক্ষতা, শারীরিক সক্ষমতা এবং খেলার অনন্য কৌশলে নজির গড়ল বাংলা দলের খেলোয়াড়রা।

লিগ থেকে নক আউট সব স্তরেই বাজিমাত করেছে বাংলা দল। শুক্রবার সেমিফাইনালে চুঁচুড়া নেতাজি সুভাষ স্পোর্টস এরিনায় ছত্তিশগড়কে ১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠল বাংলা দল। ফলাফল বাংলার পক্ষে ৩৭–৩৬। বুধবার মণিপুরকে হারিয়ে প্রি–কোয়াটার ফাইনালে উঠেছিল বাংলা হ্যান্ডবল দল। বৃহস্পতিবার সকালে বড় ব্যবধানে লাক্ষাদ্বীপকে হারিয়ে কোয়াটার ফাইনালে ওঠে বাংলা দল। বৃহস্পতিবার বড় ব্যবধানে গুজরাটকে পর্যদুস্ত করে সেমিফাইনালে ওঠে বাংলা দল। শুক্রবার ছিল সেমিফাইনাল খেলা। নেতাজি সুভাষ স্পোর্টস এরিনার ইনডোর স্টেডিয়ামে বাংলার মুখোমুখি হয় ছত্তিশগড়। শুরু থেকেই ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। শুরুতে বাংলা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। প্রথমার্ধে প্রায় পাঁচ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থাকে বাংলা। প্রথমার্ধে বাংলার একের পর এক গোল। আর ইনডোর স্টেডিয়াম পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে করতালির আওয়াজে।

দ্বিতীয়ার্ধে ছত্তিশগড়ের খেলোয়াড়দের লাগাতার আক্রমণ পর্যদুস্ত করে দেয় বাংলা দলকে। পাওয়ার প্লের কাছে কিছুটা দমে যেতে দেখা যায় বাংলার খেলোয়াড়দের। পরপর গোল হতে থাকে। ফলাফল এক সময় সমান সমান হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফলাফলের নিরিখে বাংলাকে ছাপিয়ে যায় ছত্তিশগড়। বাধ্য হয়ে শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি ক্রীড়া নৈপুণ্যতার সঙ্গে লড়াই জারি রাখে বাংলার খেলোয়াড়রা। খেলার একঘন্টা সময় সীমা শেষ হয়ে যায়। রেফারির বাঁশি বেজে ওঠে। ফলাফল তখন ড্র। এক্সট্রা টাইম খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। কিছুক্ষণের টাইম আউট। তাঁর পর আবার শুরু হয় খেলা। এক্সট্রা টাইমের শুরুতেই আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায় বাংলা দলের খেলোয়াড়দের। বর্ধিত পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ছত্তিশগড়ের ছয় গোলকে টপকে যায় বাংলা দল। সাত গোল দিয়ে জয়লাভ করে বাংলা। হ্যান্ডবলের ইতিহাসে এই প্রথম বাংলা দল ফাইনালে উঠল।

জয় নিয়ে বাংলা দলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের এমডি সত্যম রায়চৌধুরী। তিনি প্রশংসা করেছেন বাংলার খেলোয়াড়দের ক্রীড়া নৈপূণ্যতার। বলেছেন, ইতিমধ্যেই ফাইনালে উঠে নজির গড়েছে বাংলা দল। এই জয়ের সাক্ষী থাকল নেতাজি সুভাষ স্পোর্টস এরিনা এবং উপস্থিত দর্শকরা সকলেই। তিনি আশাবাদী ফাইনালে বাংলার জয় নিয়ে। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলা দলের খেলোয়াড়, কোচ, ম্যানেজার থেকে কর্মকর্তা সকলকেই। 


ছবি:‌ পার্থ রাহা