আজকাল ওয়েবডেস্ক: এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পাইলটদের দায়ী করার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের শীর্ষ পাইলট সংগঠন। একই সঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে বিমানের ক্যাপ্টেন নিজেই ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন, যা বিমান বিধ্বস্তের মূল কারণ হতে পারে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন তদন্তকারীরা ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছেন যে ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়াল জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাট-অফ’ মোডে নিয়ে গিয়েছিলেন। উড়ানের কয়েক সেকেন্ড পরেই প্রথম কর্মকর্তা ক্লাইভ কুন্ডার তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি সুইচ ঘুরিয়ে দিলেন। সেই মুহূর্তে প্রথম কর্মকর্তা আতঙ্কিত হলেও ক্যাপ্টেন ছিলেন শান্ত।
আরও পড়ুন: গলায় গোখরো ঝুলিয়ে 'শিব' সাজাই কাল হল! দুই সন্তানের পিতাকে গিলে খেল ‘নাগরাজ’!
AI 171 ফ্লাইটটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেলের ছিল এবং এটি লন্ডনের উদ্দেশ্যে আহমেদাবাদ থেকে উড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু উড়ানের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেটি BJ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসে ধাক্কা মেরে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ২৬০ জন মারা যান — ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রু, ও ১৯ জন মাটিতে থাকা সাধারণ মানুষ।
এদিকে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস (FIP) বিবৃতি জারি করে জানায়, “প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পদ্ধতি ও তা থেকে পাইলটদের দোষারোপ করার বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পাইলট প্রতিনিধিদের তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি এক তরফা ও অবিবেচিত সিদ্ধান্ত।”
ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)-এর প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, উড়ানের পরপরই দুটি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ‘রান’ থেকে ‘কাট-অফ’ পজিশনে চলে যায়। এই সুইচগুলি ইঞ্জিনে জ্বালানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে রিপোর্টে কোথাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি যে সুইচগুলি পাইলটরা নিজের হাতে ঘুরিয়েছেন কিনা।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে বৈদ্যুতিক গাড়ি নীতি চার মাস বাড়ল: বায়ু দূষণ রোধে সবুজ পরিবহণের দিকে জোর
একটি কথোপকথনের উল্লেখে দেখা যায়, এক পাইলট অন্যজনকে জিজ্ঞেস করছেন, “তুমি ফুয়েল কাট করলে কেন?”, উত্তরে অপর পাইলট বলছেন, “আমি করিনি।” তবে পুরো ককপিট রেকর্ড এখনো প্রকাশ পায়নি, যার ফলে সামাজিক মাধ্যমে নানা জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সুইচ আকস্মিকভাবে নড়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া, বিমানের সফটওয়্যার ও বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণেও এই সুইচ ‘কাট-অফ’ মোডে যেতে পারে কিনা, তা নিয়েও এখন তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: দারিদ্র্য হ্রাস না, বরং বেড়েছে ক্ষুধা: সরকারি ও বিশ্বব্যাংকের দাবি নিয়ে প্রশ্ন
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গোটা ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বহরে ফুয়েল সুইচের লকিং মেকানিজম পরীক্ষা করে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় সরকারও স্পষ্ট জানিয়েছে, এই রিপোর্টটি এখনো চূড়ান্ত নয় এবং ফাইনাল তদন্তে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তার আগে কোনো সিদ্ধান্তে না আসার জন্য সংবাদমাধ্যম ও জনসাধারণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
