আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিশুমৃত্যুর হার কমাতে নয়া উদ্যোগ, আমদাবাদে চালু অত্যাধুনিক ‘মাতৃ দুগ্ধ ব্যাঙ্ক’। নবজাতকদের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা নিয়ে আমদাবাদ সিভিল হাসপাতালে চালু হল ‘মা বাৎসল্য’ মাদার্স মিল্ক ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবার এই নতুন কেন্দ্রটির উদ্বোধন করলেন গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঋষিকেশ পটেল।
অনুষ্ঠানে গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী শিশুমৃত্যুর হার কমাতে দুগ্ধ ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। ঋষিকেশ বলেন, “নবজাতকদের জন্য মায়ের দুধই সর্বোত্তম আহার। এর মধ্যে অপরিহার্য পুষ্টিগুণ, অ্যান্টিবডি এবং রোগ প্রতিরোধকারী নানা উপাদান থাকে।” তিনি আরও বলেন, “কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মা পর্যাপ্ত দুধ তৈরি করতে পারছেন না, অথবা শিশু গুরুতর অসুস্থ, অপরিণত বা সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছে। সেই সব পরিস্থিতিতে ওই শিশুদের কাছে মায়ের দুধ পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। এই ধরনের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই শিশুমৃত্যুর হার কমাতে আমদাবাদ সিভিল হাসপাতালে মাদার্স মিল্ক ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
বর্তমানে সুরাট, ভদোদরা, ভালসাদ এবং গান্ধীনগরে এমন দুগ্ধ ব্যাঙ্ক চালু রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভাবনগর, জামনগর এবং রাজকোটের সিভিল হাসপাতালেও আরও তিনটি নতুন দুগ্ধ ব্যাঙ্ক তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
এই দুগ্ধ ব্যাঙ্কটি ক্লাউড-ভিত্তিক রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করে, যেখানে প্রত্যেক রোগীর একটি স্বতন্ত্র আইডি নম্বর থাকবে। এখানে মায়েদের জন্য আটটি আধুনিক ‘মিল্ক এক্সপ্রেশন স্টেশন’ রয়েছে। সংগৃহীত দুধ স্বয়ংক্রিয় পাস্তুরাইজারের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত ও সুরক্ষিত করা হয়।
এই কেন্দ্রটি তৈরির জন্য আমেরিকার ‘বিজে মেডিক্যাল কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’, ‘পান্ড্য ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন’ এবং ওই কলেজের ১৯৭৪ সালের ব্যাচের ছাত্র ডক্টর গৌরাঙ্গকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। ডক্টর গৌরাঙ্গ একাই এই প্রকল্পের জন্য ৮০,০০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা) দান করেছেন।
দুগ্ধ সংরক্ষণের জন্য এখানে দু’টি ভার্টিকাল ও একটি হরাইজন্টাল ডিপ ফ্রিজার রয়েছে, যেখানে মোট ৪৫ লিটার দুধ রাখা যাবে। দুধের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে এবং ব্যাকটেরিয়া পরীক্ষার জন্য ১০ জন নার্স, ১ জন ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং ২ জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের একটি দল রয়েছে, যারা দিনরাত সবসময় পরিষেবা দেবেন।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে স্তন্যপান করানোর পরেও, হাসপাতালের দুগ্ধ-ব্যাঙ্কে (মিল্ক ব্যাঙ্ক) তিন লিটার বুকের দুধ দান করে নজির গড়েন এক মা। অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের এক প্রসূতির এহেন দানে অভিভূত সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও। হাসপাতালের তরফে বিশেষ সম্মান জানানো হয়েছে ত্রিবেণী নামের ওই মহিলাকে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
হাসপাতাল সূত্রে খবর, রায়দুর্গমের বাসিন্দা ত্রিবেণী গত ২৪ জুন এই হাসপাতালেই এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। সময়ের আগেই জন্ম হয় তাঁর সন্তানের। মাত্র সাত মাসে জন্মানোর কারণে শিশুটির ওজন বেশ কিছুটা কম ছিল। ফলে তাকে হাসপাতালে নবজাতকদের জন্য নির্মিত বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্র তথা এনআইসিইউ-তেই ভর্তি রাখতে হয়। নিজের সন্তানের এহেন শারীরিক প্রতিকূলতার মধ্যেও অন্য শিশুদের কথা ভেবেছেন ত্রিবেণী। নিজের সন্তানের প্রয়োজন মেটার পর অতিরিক্ত স্তন্য তিনি দান করার সিদ্ধান্ত নেন। চিকিৎসকদের কথায়, “এই মহানুভবতা এক জন আদর্শ মায়ের পক্ষেই সম্ভব।”