মশারা প্রায় প্রতিটি দেশেই মানুষকে কামড়ায়। কিন্তু কি এমন কোনও দেশ আছে যেখানে এই রক্তচোষা পোকা নেই? উত্তর হল হ্যাঁ, আছে।
2
9
পৃথিবীতে একটি দেশ আছে যেখানে কোনও মশা নেই: আইসল্যান্ড। অথচ এর প্রতিবেশী নরওয়ে, স্কটল্যান্ড এবং গ্রিনল্যান্ডে একাধিক প্রজাতির মশা রয়েছে।
3
9
বিজ্ঞানীদের কাছে এনিয়ে কয়েকটি তত্ত্ব আছে। একটি ধারণা হল, মশারা এখনও আইসল্যান্ডে পৌঁছাতে পারেনি। দেশটি সমুদ্র দিয়ে চারদিকে শত শত মাইল বিচ্ছিন্ন, যা প্রাকৃতিকভাবে একটি বাধা তৈরি করে, ফলে মশার পক্ষে উড়ে গিয়ে সেখানে পৌঁছানো কঠিন।
4
9
তবে মশারা বিমানে করেও ভ্রমণ করতে পারে। আইসল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লিমনোলজি বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক গিসলি মার গিসলাসন একবার গ্রিনল্যান্ড থেকে আইসল্যান্ডগামী ফ্লাইটে একটি মশা ধরে এটি নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি আরও জানান, মশারা বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারেও কয়েক ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে, এমনকি হিমশীতল অবস্থায়ও।
5
9
তাহলে কেন আইসল্যান্ডে তারা টিকে থাকতে পারছে না? উপযুক্ত প্রজনন ক্ষেত্রের অভাবই মূল কারণ নয়। দেশটিতে যথেষ্ট জলাশয় ও জলাভূমি আছে যেখানে মশা সহজেই ডিম পাড়তে পারত। আসল কারণ সম্ভবত এর কঠোর আবহাওয়া।
6
9
মশার জীবনচক্র চার ধাপে বিভক্ত — ডিম, লার্ভা, পিউপা এবং পূর্ণবয়স্ক মশা। পূর্ণবয়স্ক মশা জলে ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে লার্ভা বের হয়, তারপর তা পিউপাতে রূপ নেয় এবং শেষে পূর্ণবয়স্ক মশা হয়।
7
9
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের ইনসেক্ট বায়োলজিস্ট রবার্ট জোন্সের মতে, মশার লার্ভা বেড়ে ওঠার জন্য তরল জলের প্রয়োজন। কানাডিয়ান আর্কটিকের মতো অত্যন্ত ঠান্ডা অঞ্চলে কিছু মশা ডিম অবস্থায় সুপ্ত থেকে জমাট জলেও টিকে থাকে।
8
9
অন্যদিকে, মধ্য ইউরোপের কিছু উষ্ণ এলাকায় মশারা শীতে টিকে থাকে এমন জলাশয়ে যা সম্পূর্ণ জমে যায় না, অথবা প্রাপ্তবয়স্ক মশা মাটির গর্ত কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়ে থেকে বেঁচে যায়। আইসল্যান্ডের আবহাওয়া এর মাঝামাঝি।
9
9
সেখানে দীর্ঘ শীত আর শরৎ ও বসন্তে বারবার জমাট বাঁধা ও গলনের চক্র চলে। এই প্রক্রিয়ায় ডিম ও লার্ভাগুলো টিকে থাকতে পারে না, ফলে মশাদের বংশবিস্তার ব্যাহত হয়।