শীতে অনেকে হাঁটুর ব্যথায় বেশি ভোগেন। বিশেষ করে বয়স্করা, আর্থ্রাইটিস থাকলে বা আগে হাঁটুতে আঘাত লাগলে, ঠান্ডার সময়ে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। অনেক সময় সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটু শক্ত লাগে, হাঁটতে কষ্ট হয় বা সিঁড়িতে ওঠার সময়ে ব্যথা বাড়ে। কিন্তু কেন এমন হয় এবং কীভাবেই বা এই ব্যথা সামলানো যায়? জেনে নেওয়া যাক।
শীতকালে হাঁটুর ব্যথা বাড়ার কারণ কী? ঠান্ডা আবহাওয়ায় আমাদের শরীর নিজেকে গরম রাখার জন্য রক্তনালী কিছুটা সংকুচিত করে। এর ফলে হাঁটু ও অন্যান্য জয়েন্টে রক্ত চলাচল কমে যায়। রক্ত সঞ্চালন কম হলে জয়েন্টে শক্তভাব ও ব্যথা বাড়ে। এছাড়া শীতকালে আমরা সাধারণত কম নড়াচড়া করি। বেশি সময় বসে থাকলে বা শরীর ঠিকমতো নড়াচড়া না করলে হাঁটুর চারপাশের পেশি শক্ত হয়ে যায়। এর ফলেও ব্যথা বাড়তে পারে। যাঁদের আর্থ্রাইটিস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ঠান্ডার মরশুম জয়েন্টের প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়।
শীতকালে হাঁটুর সমস্যায় যেসব লক্ষণ দেখা যায়, তা হল—
*অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠতে গেলে হাঁটু শক্ত লাগা।
*হাঁটু ভাঁজ করতে বা সোজা করতে কষ্ট হওয়া
*হাঁটার সময় বা সিঁড়ি ওঠানামায় ব্যথা
*হাঁটুর চারপাশে ফোলা বা ভারীভাব
*কখনও কখনও হাঁটুতে শব্দ হওয়া
শীতে হাঁটুর ব্যথা কমানোর সহজ উপায়
১. হাঁটু গরম রাখুন – ঠান্ডা থেকে বাঁচতে হাঁটু ঢেকে রাখুন। থার্মাল বা গরম কাপড় ব্যবহার করতে পারেন।
২. হালকা ব্যায়াম করুন – প্রতিদিন হালকা হাঁটা, স্ট্রেচিং বা ঘরে বসে সহজ ব্যায়াম করলে হাঁটুর পেশি মজবুত থাকবে। বেশি সময় এক ভঙ্গিতে বসে থাকবেন না – মাঝে মাঝে উঠে একটু হাঁটাচলা করুন।
৩. গরম জল ব্যবহার – গরম জলে স্নান বা হাঁটুতে হট ওয়াটার ব্যাগ দিলে ব্যথা কমে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন – অতিরিক্ত ওজন হাঁটুর উপর বেশি চাপ ফেলে, তাই ওজন ঠিক রাখা জরুরি।
৫. পুষ্টিকর খাবার খান – ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধ, ডিম, মাছ খেলে হাড় ও জয়েন্ট মজবুত থাকে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন? যদি হাঁটুর ব্যথা খুব বেশি হয়, ফোলা বাড়ে, হাঁটতে সমস্যা হয় বা ঘরোয়া উপায়ে আরাম না মেলে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
