আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট পেশ করল এনআইএ। চার্জশিটে এনআইএ দাবি করেছে, জঙ্গি হামলায় সাত অভিযুক্তের মধ্যে লস্কর-ই-তইবার (এলইটি) একজন শীর্ষ কমান্ডারও রয়েছেন। চার্জশিটে পাঁচজন সন্দেহভাজন এবং দু’টি জঙ্গি সংগঠন- লস্কর-ই-তইবা (এলইটি) এবং দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২২শে এপ্রিলের ওই পাহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক।
এনআইএ-র চার্জশিটে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং হামলার প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। পহেলগাঁও হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে ভূমিকার জন্য লস্কর-ই-তইবা এবং টিআরএফ-কে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এনআইএ-র ১৫৯৭ পাতার চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, লস্কর-ই-তইবার শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাট ছিলেন পহেলগাঁও হামলার প্রধান সমন্বয়কারী। এনআইএ-র চার্জশিটে সেই তিন পাকিস্তানি জঙ্গির নামও রয়েছে। সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান এবং হামজা আফগানি গত জুলাই মাসে শ্রীনগরের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন।
এলইটি/টিআরএফ এবং অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩, অস্ত্র আইন, ১৯৫৯ এবং বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (ইউএপিএ), ১৯৬৭-এর প্রাসঙ্গিক ধারার অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জন্য দণ্ডবিধির ধারাও প্রয়োগ করেছে।
এছাড়াও, আরও দুই সন্দেহভাজন পারভেজ আহমেদ এবং বশির আহমেদের নামও রয়েছে চার্জশিটে। এই দু’জনের বিরুদ্ধে তিন জঙ্গিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই দু’জন পহেলগাঁও হামলায় জড়িত তিন জঙ্গির পরিচয় প্রকাশ করেছিল। তাঁরা যে লস্করের সঙ্গে যুক্ত পাকিস্তানি নাগরিক, তাও জানিয়েছিল।
সাজিদ জাট সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, লাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব এবং শানি-সহ আরও কয়েকটি ছদ্মনামে পরিচিত। ২০২২ সালের অক্টোবরে তাঁকে ইউএপিএ আইনের অধীনে একজন ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থাগুলির সন্দেহ, সাজিদ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে তাঁর কাজ পরিচালনা করে।
তদন্তকারী সংস্থাগুলির দাবি, সাজিদ শুধু টিআরএফ-এর অপারেশনাল প্রধানই নন, বরং কাশ্মীর উপত্যকায় কর্মী নিয়োগ, অর্থ জোগানো এবং অনুপ্রবেশের জন্যও দায়ী। সাজিদ নাম বেশ কিছু প্রধান হামলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম, ২০২৩ সালের ধাঙ্গরি গণহত্যা (তিনিই ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ের উপর হামলা এবং ২০২৪ সালের জুন মাসে রিয়াসি বাস হামলা। সাজিদের বিরুদ্ধে হাইব্রিড জঙ্গিদের রসদ ও অভিযানের সহায়তা প্রদানেরও অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে কাশ্মীরের জঙ্গি নেটওয়ার্কের সবচেয়ে বিপজ্জনক মুখ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
