আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোটি কোটি ভারতীয়র কাছে সুখের খবর হতে পারে দ্রুতই। জিএসটি নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবিষয়ে স্বাধীনতা দিবসের দিন আগেও খানিকটা ইঙ্গিত মিলেছিল প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। তিনি যে দীপাবলি ধামাকার কথা বলেছিলেন সেখানেই ছিল এর বিরাট ইঙ্গিত।


এবার স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে উঠে যেতে পারে জিএসটি। যদি এটি কার্যকর হয়ে যায় তাহলে সেটি হবে ভারতীয়দের কাছে বিরাট সুখের খবর। বর্তমানে আপনি যদি স্বাস্থ্য বিমা করতে যান তাহলে সেখানে আপনাকে জিএসটি দিতেই হয়। সেখানে আপনাকে নতুন বিমা করানো থেকে শুরু করে পুরনো বিমাকে যদি রিভিউ করতে হয় সেটিও দেখে নিতে হত। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আপনাকে জিএসটি দিতে হত। এখানে জিএসটি ছিল প্রায় ১৮ শতাংশ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যদি আপনার বার্ষিক প্রিমিয়াম হয় ২০ হাজার টাকা। তাহলে সেখানে কর হিসেবে আপনাকে অতিরিক্ত দিতে হবে আরও ৩৬০০ টাকা। ফলে আপনার বছরে মোট খরচ হবে ২৩ হাজার ৬০০ টাকা।

আরও পড়ুন: নবদম্পতিদের জন্য সুখবর, ১০ বছরেই হতে পারেন কোটিপতি, কীভাবে জেনে নিন এখনই


সাধারণ পরিবারের কাছে এই জিএসটি অনেক বেশি চাপের বলে বারে বারে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠে এসেছিল। তবে নতুন প্রস্তাব থেকে উঠে এসেছে অন্য তথ্য। সেখানে স্বাস্থ্য বিমা থেকে জিএসটি একেবারে তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিষয়ট যদি জিএসটি কাউন্সিল অনুমোদন করে তাহলে সেখানে এবিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এরফলে আর এই খাতে কোনও জিএসটি দিতে হবে না। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য বিমাতে বিনিয়োগ করার দিকটি আরও বেশি করে দেখা যাবে।


এই প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন মন্ত্রী প্রথম বলেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। বিষয়টিতে সায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদি স্বাস্থ্য বিমা থেকে জিএসটি উঠে যায় তাহলে সেখানে কেন্দ্রীয় কোষাগারে অনেকটা অর্থের ঘাটতি দেখা যেতে পারে। ২০২৪ অর্থবর্ষে মোট স্বা্স্থ্য বিমা হয়েছে ৮ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। সেখানে অতিরিক্ত হিসেবে রয়েছে আরও ১৫০০ কোটি টাকা। ফলে যদি এটি উঠে যায় তাহলে মোট ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি দেখা যাবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতির কারবারিরা।


বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে বহুদিন থেকেই সরব তৃণমূল কংগ্রেস। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সেই দাবি জানিয়ে চিঠিও লিখেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে। বিষয়টি নিয়ে সংসদের অধিবেশনেও সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। অতীতে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। দেশের বাকি রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও জীবন ও স্বাস্থ্যবিমার জিএসটি কম করার পক্ষেই। বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, জীবন এবং স্বাস্থ্য বিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি বিমাক্ষেত্রকে সংকুচিত করছে। কিন্তু এপর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছিল কেন্দ্র।


স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেন, আগামী দিনে করকাঠামোর আরও সরলীকরণ হবে। দেশকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে করের বোঝা কমিয়ে নেক্সট জেনারেশন জিএসটি চালু করা হবে।  তারপরই স্বাস্থ্যবিমা থেকে জিএসটি পুরোপুরি প্রত্যাহার করার পথে কেন্দ্র। মন্ত্রিগোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ১৮ থেকে একেবারে ০ শতাংশ করে নেমে আসবে জীবন ও স্বাস্থ্যবিমা। জিএসটি কাউন্সিলের পরের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে এর সুবিধা সরাসরি সাধারণ নাগরিকরা পাবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যেই। কারও কারও ধারণা, এতেও বিমার প্রিমিয়াম কমবে না। বুধবার মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে একাধিক সদস্য দাবি করছেন, শুধু স্বাস্থ্যবিমাকে করমুক্ত করলেই হবে না, তার সুবিধা যাতে সাধারণ নাগরিক পান, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।