আজকাল ওয়েবডেস্ক: অনেকেরই জীবনে অন্তত একবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে—এটিএম থেকে টাকা তোলার সময় হঠাৎ কোনও প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে টাকা আটকে যায়। যতই চেষ্টা করুন না কেন, নোটগুলো বাইরে আসে না। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের পরিস্থিতি অনেক চাপ এবং দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।
 
 কখনও কখনও এটিএম আংশিক অর্থ দেয়, অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরিমাণের কিছু টাকা হাতে আসে আর বাকিটা মেশিনের ভেতরেই আটকে থাকে। সাধারণত সার্ভারের সমস্যা অথবা এটিএমের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটে।
 
 এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আবার জোর করে নোট টেনে বের করারও চেষ্টা করবেন না, কারণ এতে টাকা ছিঁড়ে যেতে পারে বা মেশিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বরং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, অনেক সময় সামান্য দেরির পর আটকে থাকা টাকা নিজে থেকেই বেরিয়ে আসে। যদি লেনদেন ব্যর্থ হয়, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে ফেরত দিয়ে দেয়। তাই শান্ত থাকুন এবং আপনার অ্যাকাউন্টে খেয়াল রাখুন। যদি টাকা হাতে না পান অথচ আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ কেটে নেওয়া হয়, তাহলে অবশ্যই লেনদেনের রসিদটি সংরক্ষণ করুন।
আরও পড়ুন: বিশ্বের নতুন সমস্যা উত্তর কোরিয়া, কোথায় এগিয়ে গেল তারা
 
 যদি রসিদ না নিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে মোবাইলে আসা এসএমএস নিশ্চিতকরণ বার্তা অথবা আপনার ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট অভিযোগ করার সময় কাজে আসবে। তবে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও যদি টাকা ফেরত না আসে, তাহলে অবিলম্বে ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিসে যোগাযোগ করুন। তাদের কাছে এটিএমের অবস্থান, এটিএম কোন ব্যাঙ্কের অধীনে পরিচালিত হয়, লেনদেনের তারিখ, সময়, ট্রানজাকশন আইডি এবং এটিএম রসিদ আছে কি না—এসব তথ্য দিন।
 
 সম্ভব হলে এটিএম স্ক্রিনে প্রদর্শিত ত্রুটির বার্তার ছবি বা স্ক্রিনশট নিয়ে রাখুন। কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে কাছের ব্যাঙ্ক শাখায় গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দিন। অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় অবশ্যই একটি ট্র্যাকিং বা রেফারেন্স নম্বর চাইবেন, যাতে পরবর্তীতে সহজেই অভিযোগের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারেন।
 
 এছাড়াও, ব্যাঙ্কের সরকারি ওয়েবসাইট বা কাস্টমার সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনেও অভিযোগ জমা দেওয়া যায়। অবশ্যই রেফারেন্স নম্বর লিখে রাখবেন এবং ব্যাঙ্কের উত্তর অপেক্ষা করবেন। সাধারণত ৭ থেকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তবে ব্যাঙ্ক যদি যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেয় অথবা আপনার প্রত্যাশিত সমাধান না হয়, তাহলে বিষয়টি ব্যাঙ্কিং ওম্বাডসম্যানের কাছে তুলে ধরতে পারেন।
 
 সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নিজে থেকে কখনও এটিএম মেশিন খোলার চেষ্টা করবেন না। এটি বিপজ্জনক এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-এর নির্দেশ অনুযায়ী, ব্যাঙ্ককে বাধ্যতামূলকভাবে এই ধরনের ব্যর্থ লেনদেন যাচাই করে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে অর্থ ফেরত দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে টাকা ফেরত না এলে ব্যাঙ্ককে মূল অর্থের পাশাপাশি সুদও গ্রাহককে প্রদান করতে হয়। সুতরাং এটিএমে টাকা আটকে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক নিয়ম মেনে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নিলে দ্রুত সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব।
