যে কোনও বয়সেই মূত্রনালিতে সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) হতে পারে। ইউটিআই হল এমন একটি সংক্রমণ যা কিডনি, মূত্রাশয়, মূত্রনালি বা মূত্রতন্ত্রের যে কোনও অংশে হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি মূত্রনালি দিয়ে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু প্রবেশের কারণে ঘটে। চিকিৎসকদের মতে, রোগটি এক বার সেরে গেলেও বার বার ফিরে আসার আশঙ্কা থাকে। মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। যার অন্যতম কারণ পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানা। বিশেষ করে কর্মসূত্রে হোক বা অন্য কোনও কারণে, যাদের দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকতে হয়, তাঁদের পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। আর এই টয়লেটগুলো অনেক সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে না, যার ফলে নানা ধরনের সংক্রমণ ও স্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের শৌচাগার ব্যবহারের আগে বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
১. হাত ধোয়া অপরিহার্যঃ টয়লেট ব্যবহারের আগে ও পরে অবশ্যই সাবান ও পরিষ্কার জল দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাত ধোয়ার মাধ্যমে জীবাণু ছড়িয়ে পড়া অনেকাংশে রোধ করা যায়।
২. সিট কভার বা টিস্যু ব্যবহারঃ যদি টয়লেট সিট খুব পরিষ্কার না হয়, তাহলে টিস্যু বা ডিসপোজেবল সিট কভার ব্যবহার করা উচিত। প্রয়োজনে নিজের সঙ্গে স্যানিটারি ওয়াইপ বা ওয়েট টিস্যু রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ শরীরে এই খনিজের অভাব হলে বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি! হার্ট ভাল রাখতে আপনার পাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে তো?
৩. নিজস্ব হাইজিন সামগ্রী সঙ্গে রাখাঃ পাবলিক টয়লেটে অনেক সময় টিস্যু, সাবান বা স্যানিটাইজার পাওয়া যায় না। তাই এগুলো নিজের সঙ্গে রাখা নিরাপদ।
৪.শরীর সম্পূর্ণ শুকনো রাখাঃ টয়লেট ব্যবহারের পর ভেজা কাপড় বা ভেজা অবস্থায় বেশি সময় না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
৫. পরিবেশ পরীক্ষা করাঃ টয়লেট ব্যবহার করার আগে ফ্লাশ কাজ করছে কিনা, মেঝে শুকনো কিনা এবং দরজা সঠিকভাবে বন্ধ হচ্ছে কিনা সেগুলো যাচাই করা উচিত।
যা এড়িয়ে চলতে হবে
১. সরাসরি সিটে বসা নয়ঃ পাবলিক টয়লেট সিট অনেক সময় জীবাণুযুক্ত হতে পারে। তাই সরাসরি না বসাই ভাল।
২. মেঝেতে বসা বা জিনিস রাখা নয়ঃ টয়লেটের মেঝে সাধারণত জীবাণুতে ভরা থাকে। তাই ব্যাগ, বোতল বা কাপড় মেঝেতে রাখা উচিত নয়।
৩. অপরিচ্ছন্ন জল ব্যবহার নয়ঃ কলের জল বা অপরিচ্ছন্ন স্নানের সামগ্রী ব্যবহার করলে সংক্রমণ হতে পারে।
৪. খাবার বহন বা খাওয়া এড়িয়ে চলাঃ জনসাধারণের টয়লেটে খাবার রাখা বা খাওয়া সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলা উচিত।

৫. স্বাস্থ্য সমস্যা লুকিয়ে না রাখাঃ টয়লেট ব্যবহারের পর যদি কোনও অস্বস্তি, চুলকানি বা জ্বালাভাব দেখা দেয়, তবে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
চিকিৎসকদের মতে, একেবারে পাবলিক টয়লেট ব্যবহার এড়ানো সম্ভব নয়। তবে সচেতনতা ও সতর্ক অভ্যাসই হতে পারে নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রধান চাবিকাঠি। কিছু সাধারণ সতর্কতা মেনে চললে মহিলারা নিজেদের স্বাস্থ্য অনেকাংশে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। বিশেষ করে হাত ধোয়া ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে যত্নবান হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
