প্রাচীনকাল থেকেই হলুদ ভারতীয় রান্না ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মধ্যে থাকা সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন-এর গুণাগুণ নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি গবেষণা বলছে, সঠিক মাত্রায় হলুদ কিডনিকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। রান্নায় হলুদ একটি অত্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। আর্য়ুবেদে হলুদকে ওষুধ হিসাবে গণ্য করা হয়। আবার হলুদ আমাদের দেশের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের নিয়মেও লাগে। সকালে উঠে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ খেলে অনেক রকম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই অনেকেই রোজ সকালে কিংবা ভাতের পাতে কাঁচা হলুদ খান। আবার উপকারের কথা ভেবে রান্নাতেও বেশি হলুদ ব্যবহার করেন অনেকে। তবে হলুদের যেমন সুফল আছে, তেমনি অতিরিক্ত হলুদ খেলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও রয়েছে।
কিডনির জন্য হলুদের উপকারিতা
১. প্রদাহ কমায়ঃ কারকিউমিনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য কিডনিতে প্রদাহ ও ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং কিডনিতে প্রোটিন ক্ষয়ও কমায়।
২. বিষাক্ত রাসায়নিক থেকে সুরক্ষাঃ গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ কিডনিকে সিসপ্ল্যাটিন, জেন্টামাইসিন বা আরসেনিকের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কিছু ওষুধজনিত ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে।
৩. ডায়াবেটিক কিডনি রোগে সহায়কঃ ডায়াবেটিসজনিত কিডনি সমস্যায় নিয়মিত সীমিত পরিমাণ হলুদ খেলে প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা কমে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে আসে।

অতিরিক্ত হলুদ খেলে ঝুঁকিও রয়েছে। যেমন-
১. কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কাঃ হলুদের মধ্যে উচ্চমাত্রায় অক্সালেট থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে।
২. সাপ্লিমেন্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ বাজারে পাওয়া কারকিউমিন সাপ্লিমেন্ট অতিরিক্ত খেলে কিডনির ক্ষতি হয়। এমনকী কিডনি ফেইলিওর পর্যন্ত হতে পারে।
৩. ওষুধের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াঃহলুদ রক্ত পাতলা করার কাজ করে, আয়রন শোষণ কমিয়ে দিতে পারে এবং কিছু ওষুধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, রান্নায় স্বাভাবিকভাবে ব্যবহৃত হলুদ সাধারণত নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। কিন্তু সাপ্লিমেন্ট বা অতিরিক্ত খেলে বিভিন্ন ধরনের শরীরিক সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে কিডনির সমস্যা থাকলে হলুদ খাওয়ার পরিমাণ সীমিত রাখা উচিত।
