রোজ রাতেই পাশে শোয়া মানুষের আপনার নাক ডাকার জন্য ঘুম ভেঙে যায়? ঘুমের ঘোরে অনেকে এমনই সশব্দে নাক ডাকেন। অনেকে এই সমস্যাকে খুব একটা পাত্তা দেন না। সাধারণত ঘুমন্ত অবস্থায় নাক, মুখ, গলা থেকে শুরু করে শ্বাসনালীর কোনও অংশে বায়ু বাধা পেলে এমন শব্দ তৈরি হয়। কিন্তু আপাতভাবে সামান্য মনে হলেও এর পিছনে থাকতে পারে একাধিক জটিল রোগ। বিশেষত, যাঁরা নিয়মিত নাক ডাকেন তাঁদের একাধিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে অনেকটাই বেশি।

সাধারণত তিনটি কারণে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে যেমন জেনেটিক্যাল, এনভায়রমেন্টাল এবং অ্যানাটমিক্যাল। অনেকের জিনগত কারণে নাক ডাকেন। কারওর ক্ষেত্রে দায়ী অ্যানাটমিক্যাল স্ট্রাকচার। অর্থাৎ গলার কাছে ফ্যাট বেশি থাকায় অক্সিজেন প্রবেশের পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়। ফলে  শ্বাস বন্ধ হওয়ার নাক ডাকার প্রবণতা দেখা দেয়। এনভায়রনমেন্টাল কারণ হল ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি। এক্ষেত্রে অত্যধিক ক্লান্তিও অন্যতম কারণ। এছাড়াও নাক ডাকা যে সব গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে তা হল-

*উচ্চ রক্তচাপঃ খুব জোরে নাক ডাকলে সেই ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ থাকতে পারে। যা থেকে স্ট্রোকের মতো ঘাতক রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুনঃ লাগবে না চশমা, আইড্রপেই স্পষ্ট হবে ঝাপসা দৃষ্টি! বিস্ময়কর আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের, কবে থেকে বাজারে মিলবে?

*হার্টের রোগঃ অল্প বয়সে নাক ডাকা হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে। অ্যারিদমিয়ার মতো হার্টের রোগ লুকিয়ে থাকতে পারে নাক ডাকার পিছনে। এক্ষেত্রে হৃদগতির ছন্দপতন হয়।

*ডায়াবেটিসঃ নাক ডাকার পিছনে নাক ডাকা এবং স্লিম অ্যাপনিয়ার কারণে শরীর ঠিকমতো সুগার তৈরি করতে পারে না, তাই ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।


সমস্যা সমাধানের উপায়


* পাশ ফিরে ঘুমানঃ নাক ডাকা কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায়গুলির মধ্যে একটি হল  ঘুমানোর ভঙ্গি পরিবর্তন করা। পিঠের উপর ঘুমানোর ফলে জিহ্বা এবং গলার নরম টিস্যু পিছনের দিকে সঙ্কুচিত হতে পারে। অন্যদিকে, পাশে ফিরে ঘুমালে শ্বাসনালী খোলা থাকে এবং এর ফলে নাক ডাকার আশঙ্কা কমে।

* স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুনঃ অতিরিক্ত ওজন, বিশেষ করে ঘাড় এবং গলার চারপাশে অতিরিক্ত মেদ জমলে তা নাক ডাকার কারণ হতে পারে। যখন এই অংশে অতিরিক্ত চর্বি থাকে, তখন এটি আপনার শ্বাসনালীতে চাপ দেওয়ায় আংশিক বাধা তৈরি হতে পারে।

* ঘুমানোর আগে অ্যালকোহল এবং ক্যাফিন এড়িয়ে চলুনঃ অ্যালকোহল এবং ক্যাফিন উভয়ই গলার পেশিগুলোকে শিথিল করে, যা নাক ডাকা সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে, অ্যালকোহল গলার পেশিগুলোকে খুব বেশি শিথিল করে, যার ফলে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

* ভেষজ চা পান করুনঃ ঘুমানোর আগে ভেষজ চা পান করলে গলা প্রশমিত হয় এবং নাক ডাকার আশঙ্কা কমে। ক্যামোমাইল এবং পেপারমিন্টের মতো কিছু ভেষজ প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা  শ্বাসনালী খুলে দিতে এবং ভাল ঘুমের জন্য সাহায্য করে।

* নাকের স্ট্রিপ ব্যবহার করুনঃ নাকের স্ট্রিপ হল এক ধরনের আঠালো স্ট্রিপ যা নাকের বাইরের দিকে লাগানো হয়। এগুলি নাকের পথ খুলতে এবং বায়ুপ্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে, যার ফলে ঘুমানোর সময় নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া সহজ হয়।