আজকাল ওয়েবডেস্ক: নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার একটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর রেকর্ডকে অতিক্রম করে ভারতের ইতিহাসে টানা দ্বিতীয় সর্বাধিক সময় প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন রইলেন। আজ তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের ৪,০৭৮তম দিন, যেখানে ইন্দিরা গান্ধী ১৯৬৬ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৭ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত টানা ৪,০৭৭ দিন দায়িত্বে ছিলেন। এই মুহূর্তে মোদী দেশের প্রথম স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনবার ধারাবাহিকভাবে প্রধানমন্ত্রিত্বে আসীন আছেন (২০১৪, ২০১৯, ২০২৪)। জওহরলাল নেহরুর পরে এটাই প্রথমবার কোনও প্রধানমন্ত্রী টানা তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দলকে জয়ী করে নিজের নেতৃত্ব অক্ষুণ্ণ রাখলেন।

মোদী মোট ১১ বছর ও ৬০ দিন (চলমান) ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে রয়েছেন। তিনি দেশের প্রথম ও একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি স্বাধীনতা-পরবর্তী জন্মগ্রহণকারী এবং গুজরাটের মতো অ-হিন্দিভাষী রাজ্য থেকে দীর্ঘতম সময়ের জন্য দেশের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত। তিনি দেশের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন অ-কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীও বটে। বর্তমানে ভারতের ১০ জন দীর্ঘতম সময়ের প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় মোদী দ্বিতীয় স্থানে। এই তালিকায় ৬ জনই কংগ্রেস দলের, ২ জন বিজেপির (মোদী ও বাজপেয়ী), এবং বাকি ২ জন জনতা দল ও জনতা পার্টির (মোরারজি দেশাই ও ভি.পি. সিং)।

আরও পড়ুন: অনিল আম্বানির সংস্থাগুলির উপর ইডির হানা: প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত

সর্বাধিক সময় দায়িত্বে থাকা নেতারা হলেন— জওহরলাল নেহরু (১৬ বছর ২৮৬ দিন), নরেন্দ্র মোদী (১১ বছর ১ মাস ২৯ দিন ও চলমান), ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিং, বাজপেয়ী, রাজীব গান্ধী, পি ভি নরসিমা রাও, মোরারজি দেশাই, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ও ভি.পি. সিং। উল্লেখযোগ্যভাবে, মোদীই একমাত্র অ-কংগ্রেস নেতা যিনি লোকসভায় নিজের দলের স্পষ্ট সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেছেন এবং তা দু’দুবার পূর্ণ মেয়াদে পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনবার নির্বাচিত হয়েছিলেন, ফলে মোদীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এখন টানা ছয়বার নির্বাচনী জয়ে সমৃদ্ধ — যা বিরল এবং নজিরবিহীন।

তাঁর দীর্ঘ সময়ের শাসনামলে একদিকে যেমন শক্তিশালী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ছাপ পড়েছে, তেমনই অন্যদিকে বিরোধীদের অভিযোগও উঠেছে যে, মোদী সরকারের শাসনব্যবস্থা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করেছে। নাগরিকত্ব আইন, কৃষি আইন, এবং সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের মতো বড় সিদ্ধান্ত তাঁর সময়েই কার্যকর হয়েছে, যা দেশে রাজনৈতিক মেরুকরণকেও তীব্রতর করেছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, মোদীর নেতৃত্বে ভারত এক নতুন রাজনৈতিক ধারায় প্রবেশ করেছে, যার প্রভাব আগামী প্রজন্মেও পড়বে।