আজকাল ওয়েবডেস্ক: আইপিএলের পৃথিবী থেকে বহুদূরে। এক অখ্যাত ক্রিকেটার পুলওয়ামায় শিরোনাম হলেন। স্থানীয় লিগে মাত্র ৭৭ বলে ঝড় তুলে ২৩২ রান করলেন তিনি।
তাঁর নাম আদিল নবি। উপত্যকায় যিনি 'কাশ্মীরের পোলার্ড' নামে পরিচিত। একটা বিস্ফোরক ইনিংস মুহূর্তের মধ্যে আদিল নবিকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসে। ১১টি চার ও ২৯টি ছক্কায় সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। দশ নম্বর জার্সি পরে খেলতে নামেন নবি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরন পোলার্ডের নাম কে শোনেননি! বল হাতে তিনি প্রতিপক্ষকে আটকে রাখেন। আর ব্যাট হাতে যখন তখন তাণ্ডবলীলা চালাতে পারেন। দীর্ঘ চেহারার পোলার্ডের সঙ্গে কাশ্মীরের এই আদিল নবির মিল রয়েছে। সেই কারণে তাঁর নামই হয়ে গিয়েছে কাশ্মীরের পোলার্ড। শুধু নামে নয়, তিনি কামেও পোলার্ডের মতোই।
আরও পড়ুন: কলকাতা লিগে গড়াপেটার ছায়া, নির্বাসিত দুই ক্লাবের কোচ-ফুটবলার
একসময়ে দশ নম্বর জার্সি শোভা পেত শচীনের পিঠে। মাস্টার ব্লাস্টারের অবসরের পরে ওই দশ নম্বর জার্সি পরে নেমে শার্দূল ঠাকুর মর্ম বুঝতে পেরেছিলেন। দর্শকদের প্রবল কটাক্ষ ধেয়ে এসেছিল শার্দূলের দিকে। পরে খর্বকায় মুম্বইকরের দশ নম্বর জার্সি তুলে রাখে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড।
বাঙ্গাম টাইটান্সের দশ নম্বর জার্সিধারী নবি। প্রতিপক্ষ মিশওয়াড়া ক্রিকেট ক্লাব সোপিয়ানের বোলারদের যত্রতত্র ছুড়ে ফেলেন। দুই দলের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল নাগওয়ান ক্রিকেট মাঠে। জন্মু-কাশ্মীর পুলিশ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল।
স্থানীয় ক্রিকেটে নবির এহেন মারমুখী ইনিংস নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কালি খরচ হল। কঠিন পরিশ্রম, প্যাশন ও অধ্যবসায়ের জোরেই নবি বিধ্বংসী ইনিংস খেলতে পারলেন।
প্রতিপক্ষের বোলারদের উড়িয়ে দিয়ে নবি বলছেন, ''এখানে প্রতিভার কোনও অন্ত নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হল এখানে কোনও মাঠ বা অ্যাকাডেমি নেই। যেখানে গেলে আমরা নিজেদের দক্ষতাকে আরও বেশি শাণিত করতে পারব।''
ক্রিকেটবিশ্ব আদিল নবিকে চেনে না। জানেই না তাঁর ক্ষমতা। এই দারুণ বিস্ফোরণের গল্প সবার কাছে পৌঁছবে কিনা তাও জানা নেই। ক্রিকেটবিশ্বের কাছে তিনি অখ্যাত হলেও স্থানীয় ক্রিকেটে কিন্তু সমাদৃত নবি। তাঁকেই আদর্শ মানে উপত্যকার উঠতি ক্রিকেটাররা। তাঁর ক্রিকেটের প্রতি প্যাশন সেই ছোটবেলা থেকেই। ব্যাট করার পাশাপাশি অফ স্পিন বোলিংটাও করতে পারেন নবি। আদিল বলছেন, ''আমাদের এখানে টার্ফ নেই। ম্যাটের উইকেটে খেলতে হয়। ডেপুটি কমিশনারের কাছে আমাদের আবেদন তিনি যেন খেলার মাঠের বন্দোবস্ত করেন। তাহলে আমাদের ছেলেরাও শীর্ষে পৌঁছতে পারবে।'' পরিকাঠামোহীন এক অঞ্চলে ব্যাট ঘুরিয়েই নবি চলে এলেন পাদপ্রদীপের আলোয়। তাঁর দেখানো পথ ধরে বাকিরা যদি এগিয়ে আসতে পারেন, তাহলেই নবির জয়। এই জয় বিস্ফোরক ইনিংস খেলার থেকেও যে দামি।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপ নিয়ে বিরাট ঘোষণা, এক গ্রুপে ভারত-পাকিস্তান? বৈঠকে নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে দিল বিসিসিআই
