আজকালডেস্কঃ একটানা গরমের পর বর্ষাকালে খানিকটা স্বস্তি হয় বটে। কিন্তু এই সময়েও বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গুমোট ভ্যাপসা গরম পিছু ছাড়ে না। আবহাওয়া ঠান্ডা অনুভূত হলেও, আর্দ্রতা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে,। ফলে অতিরিক্ত ঘাম ও তরল ক্ষয়ের কারণে শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু গরমকালে জল খাওয়ার প্রতি নজর দিলেও বৃষ্টির মরশুমে অনেকেই পরিমিত জল খান না। যার ফলে একাধিক মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এমনকী জলতেষ্টা না পেলেও ডিহাইড্রেশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

আসলে জল পান করা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। জলের মাধ্যমেই বেশিরভাগ শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু অনেকেই সারা দিনের কাজের চাপে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে ভুলে যান। আর শরীরে জলের ঘাটতি হলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হানা দিতে পারে। তাই ডিহাইড্রেশন হচ্ছে কিনা তা বোঝা জরুরি। সেক্ষেত্রে কয়েকটি লক্ষণ দেখলেই সর্তক হন।

১. ডিহাইড্রেশনের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে গাঢ় রঙের মূত্র, কম মূত্রত্যাগ। হলুদ প্রস্রাব হলে বুঝতে হবে শরীরে জলের অভাব রয়েছে। তাই স্রাবের রং লক্ষ করুন। এছাড়াও শরীরে জলের ঘাটতির কারণে প্রস্রাব করার সময় জ্বালা বোধও হয়।

 

আরও পড়ুনঃ খাওয়ার পর ভুলেও করবেন না এই কাজ, ভয়ঙ্কর রোগের খপ্পরে পড়ে জীবন হবে বরবাদ

 

২. শরীরে জলের অভাব হলে গরমকালেও ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। আচমকা ত্বক রুক্ষ হতে শুরু করলে, ত্বকে ব্রণ ও চুলকানির সমস্যা দেখা দিলে তা শরীরে জলের ঘাটতির কারণে হতে পারে।

৩. কম জল খেলে সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি হতে পারে। অকারণে মাথা ঘোরা এবং মাথাব্যথাও হতে পারে। 
 
৪. অনেকের শরীরে জলের অভাব হলে রক্তচাপ কমে যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শ, যদি মনে হয় রক্তচাপ কমে গিয়েছে, ঘাম হচ্ছে, তাহলে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া উচিত। শরীরে জলের ঘাটতি হলে মুখে দুর্গন্ধও হয়।

৫. গুরুতর ডিহাইড্রেশন আরও বিপজ্জনক হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে দ্রুত হৃদস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট। জলের অভাবে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমে যায়। তাই সমস্ত অঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য হৃদদযন্ত্রের উপর বেশি চাপ পড়ে। ফলে হঠাৎ করে হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যেতে পারে। এমনকী খুব মারাত্মক ডিহাইড্রেশন হলে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন।

শুধু জল পান করলেই চলবে না, সঠিক পদ্ধতিতে জল খাওয়াও প্রয়োজন। কারণ ভুলভাবে জল খেলে উল্টে হতে পারে নানা শারীরিক সমস্যা।যেমন সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অন্তত এক গ্লাস জল পান করলে শরীর থাকবে টক্সিনমুক্ত তেমনই ঘুমের সময় ধীরগতির বিপাকক্রিয়াকেও সক্রিয় করে। সকালের জল লিভার, কিডনি এবং ত্বককে সতেজ রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে। একবারে পুরো গ্লাস জল পান করার পরিবর্তে, ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে অথবা কিছুক্ষণ মুখে রেখে জল পান করুন। ফ্রিজের ঠান্ডা জল সবসময় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে জল পান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। বসে মেরুদন্ড সোজা করে জল খাওয়াই বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি।