আজকাল ওয়েবডেস্কঃ অফিস হোক কিংবা ব্যক্তিগত কাজ, বর্ষাকালে বাড়ি থেকে বেরতে হয় সকলকেই। এদিকে বেশি বৃষ্টি হলেই অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বৃষ্টির মরশুমে হাজার একটা অসুখ-বিসুখের সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ে বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়ার। রাস্তার জমা জলে খোলা তারে তড়িদাহত হওয়ার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বাড়িতেও কখনও পাখা, লাইটের সুইচ অন করতে গিয়ে ইলেকট্রিক শক লাগে। যা সতর্ক না হলেই মৃত্যুর বিপদ ডেকে আনে। তবে আতঙ্কিত নয়, বরং শান্তভাবে সঠিক সময়ে কয়েকটি কাজ করলে বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়া ব্যক্তির প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।
* নিজের সুরক্ষাঃ নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। অর্থাৎ বিদ্যুতের উৎস বন্ধ না করা পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবেন না। নচেৎ আপনারও ইলেকট্রিক শক লাগতে পারে।
* মেইন সুইচ বন্ধ করুন: সম্ভব হলে অবিলম্বে ঘর বা যে স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানকার মেইন পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করুন। এটিই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।
* প্লাগ খুলে ফেলুন: যদি যন্ত্রটি প্লাগ ইন করা থাকে, তাহলে সাবধানে সকেট থেকে প্লাগটি সরিয়ে ফেলুন।
* উত্তাপযুক্ত বস্তু ব্যবহার করুন: যদি দ্রুত বিদ্যুৎ বন্ধ করতে না পারেন, তাহলে বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়া ব্যক্তিতে বাঁচানোর জন্য শুকনো কাঠ, প্লাস্টিকের কাঠি, শুকনো কাপড়ের মতো একটি বস্তু ব্যবহার করুন। ভুলেও ধাতু বা ভেজা জিনিস ব্যবহার করবেন না। দূর থেকে ধাক্কা দিয়ে বা টেনে ওই ব্যক্তিকে বিদ্যুতের উৎস থেকে আলাদা করুন।
* জরুরি নম্বরে ফোনঃ বিদ্যুতের উৎস থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা করার পরই দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স অথবা পুলিশ বা জরুরি পরিষেবার নম্বরে ফোন করে দুর্ঘটনাটি জানান।
আরও পড়ুনঃ শরীরে জলের ঘাটতি হলেই বাসা বাঁধে মারাত্মক রোগ! কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন জল কম খাওয়া হচ্ছে
আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরীক্ষা
* যদি ত্বক পুড়ে যায়, তাহলে সেখানে ঠান্ডা জল দিন। তবে ভুলেও বরফ দেবেন না। পোড়া জায়গায় ঠান্ডা, ভেজা ব্যান্ডেজ লাগান।
* পোড়া জায়গাটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন।
* কখনও পোড়ার ফোসকা ফেটে ফেলার চেষ্টা করবেন না।
* যদি আক্রান্ত ব্যক্তি ঠান্ডা বা শক অনুভব করেন তাহলে কম্বল বা কাপড় দিয়ে ঢেকে তাঁকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। আক্রান্ত মানুষটি যদি কিছু খেতে পারেন, তা হলে তাঁকে গরম দুধ বা চা দিন।
* আক্রান্ত ব্যক্তিকে নড়াচড়া করাবেন না। যদি মনে হয় যে তাঁর আভ্যন্তরীণ কোনও আঘাত আছে বা হাড় ভেঙে যেতে পারে, তাহলে চিকিৎসা সহায়তা না আসা পর্যন্ত তাঁকে নড়াচড়া করবেন না।
* আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিমভাবে তাঁর শ্বাস চালু করার চেষ্টা করতে হবে। পরিসংখ্যান বলছে, তিন মিনিটের ভিতরে শ্বাস চালু করা গেলে বেশিরভাগ আক্রান্তই বেঁচে যান।
* আক্রান্ত মানুষটির শ্বাস স্বাভাবিক থাকলে তাঁকে চিৎ করে শুইয়ে দিন। কোমর থেকে পা একটু উঁচু জায়গায় রাখুন। এতে শ্বাস নিতে সুবিধা হবে।
* বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া ব্যক্তির গলা শুকিয়ে গেলে অল্প জল খেতে দিন। গায়ে বা মাথায় জল লাগতে দেবেন না।

সতর্কতা মেনে চলুন
* ক্ষতিগ্রস্ত তার বা আলগা প্লাগ থেকে সবসময় দূরে থাকুন।
* ভেজা হাতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্পর্শ করবেন না।
* শিশুদের বৈদ্যুতিক সকেট এবং তার থেকে দূরে রাখুন।
* জলের কাছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
