আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২৫ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পেলেন গ্রাহাম স্টেইনস হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মহেন্দ্র হেমব্রম। মুক্তির সময় তাঁকে মালা পরিয়ে বার করে আনা হয়। ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস এবং তাঁর দুই নাবালক পুত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় ২৫ বছর কারাভোগের পর বুধবার ওড়িশার কেওনঝাড় জেল থেকে মুক্তি পেলেন মহেন্দ্র হেমব্রম। 

৫০ ​​বছর বয়সী হেমব্রমকে কারাবাসের সময় ভালো আচরণের কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জেলর মনস্বিনী নায়েক বলেছেন, "রাজ্য সাজা পর্যালোচনা বোর্ডের সিদ্ধান্তের পর হেমব্রমকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার কারা অধিদপ্তর এক চিঠিতে এ তথ্য জানিয়েছে। নিয়ম অনুসারে ভালো আচরণের কারণে ২৫ বছর পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।"

জেলে কর্মরত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মহেন্দ্র হেমব্রমকে ব্যাঙ্কের একটি পাসবই দেওয়া হয়েছে। জেলে শ্রমের বিনিময়ে তাঁর ওই ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টে জমা রয়েছে।

কারামুক্ত হয়ে মহেন্দ্র হেমব্রম বলেন, "ধর্মান্তকরণ সম্পর্কিত একটি ঘটনায় মিথ্যাভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে। ফলে বিনা দোষে আমি ২৫ বছর জেলে ছিলাম। আজ, আমাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।" 

১৯৯৯ সালে খ্রিস্টান মিশনারি অস্ট্রেলিয়ান গ্রাহাম স্টেইন এবং তাঁর দুই নাবালক পুত্রকে গাড়ির মধ্যে থাকা অবস্থায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। তাঁরা বেরতে চাইলেও হামলাকারীরা লাঠি হাতে তাঁদের বেরতে দেয়নি। ফলে জীবন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৫৮ বছরের গ্রাহাম স্টেইনস ও তাঁর দুই ছেলে ফিলিপ (১০) এবং টিমোথি (৬)-র। এই হামলার নেতৃত্বে ছিল দারা সিং। সব মিলিয়ে ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তিন বছরের মধ্যেই ৩৭ জন ছাড়া পেয়ে যায়। ১৪ জনের নাম ছিল চার্জশিটে। তবে শেষপর্যন্ত এদের মধ্যে ১২ জনই বেকসুর খালাস পায়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় মহেন্দ্র হেমব্রম এবং দারা সিংকে। 

মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা হেমব্রমকে ১৯৯৯ সালেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দারা সিংকে ২০০০ সালের ৩১ জানুয়ারি ধরে পুলিশ। তৎকালীন ময়ূরভঞ্জের এসপি ওয়াই বি খুরানিয়া এই তদ্তের দায়িত্বে ছিলেন। এই খুরানাই বর্তমানে ওড়িশার ডিজিপি। ২০০৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বরে মহেন্দ্র হেমব্রমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

২০০২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভুবনেশ্বরের সিবিআই আদালতে বিচার চলাকালীন, হেমব্রম মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন এবং নিজেকে একমাত্র অপরাধী বলে দাবি করে, অন্যদের নির্দোষ দাবি করেন। ২০০১ সালের ১ মার্চ খুরদার জেলা ও দায়রা আদালতে বিচার শুরু হয়, যা সিবিআই আদালত হিসেবে মনোনীত।