সম্পূর্ণা চক্রবর্তী
ইউনাইটেড কলকাতা স্পোর্টস ক্লাব - ১ (রাহুল)
সালকিয়া ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন - ১ (অয়ন)
ছয় গোলে জিততে পারত। সেখানে ম্যাচ ড্র। কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনে একটুর জন্য আরও একটি জয় হাতছাড়া করল ইউনাইটেড কলকাতা স্পোর্টস ক্লাব। শুক্রবার চুঁচুড়ার ইস্টার্ন গ্রাউন্ডে সালকিয়া ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করল দীপক মণ্ডলের দল। ম্যাচের ১৯ মিনিটে রাহুল ভিপির গোলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। কিন্তু ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে সালকিয়ার হয়ে সমতা ফেরান অয়ন মান্না। ইউনাইটেডের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতা রাহুল। এদিন ড্রয়ের সুবাদে দু'নম্বরে উঠে এল ইউনাইটেড কলকাতা স্পোর্টস ক্লাব। ৭ ম্যাচে পয়েন্ট ১৪। চারটে জয়, দুটো ড্র এবং একটি হার। তিন নম্বর থেকে দুইয়ে উঠে এল। বাকি আরও পাঁচ ম্যাচ। শুরুটা ভাল না হলেও কয়েকটা ম্যাচ জিতে টেবিলের মগডালে পৌঁছে যাওয়ার হাতছানি ছিল ইউকেএসসির সামনে। কিন্তু সেটা হাতছাড়া হল। ম্যাচে আগাগোড়াই দাপট ছিল ইউনাইটেডের। পুরোপুরি একপেশে ম্যাচ। মাঝে কয়েকটা বিক্ষিপ্ত আক্রমণ চালায় সালকিয়া। কিন্তু গোলের নীচে অনবদ্য ছিলেন মহম্মদ জাফর মণ্ডল। ম্যাচের গতির বিরুদ্ধে গিয়ে সমতা ফেরায় সালকিয়া। নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয় ইউনাইটেড। যার ফলে তিন পয়েন্টের বদলে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের দল।
ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে তুমুল বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের অবস্থার অবনতি হয়। কিন্তু কাদা মাঠে দমিয়ে রাখা যায়নি রাহুল, আদর্শদের। কাদার জন্য বারবার বল থমকে গেলেও মাটিতে বল রেখে পাসিং ফুটবল খেলার চেষ্টা করে ইউনাইটেড। প্রথমার্ধ পুরো তাঁদের দখলে। পুরোপুরি একতরফা ম্যাচ। একাধিক গোলের সুযোগ পায়। রাহুলরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে বিরতিতে অন্তত চার গোলে এগিয়ে যেতে পারত ইউকেএসসি। দুটো সিটার নষ্ট। বাকি দুটো মিসের ক্ষেত্রে অবশ্য ফুটবলারদের দায়ী করা যাবে না। বল জল কাদায় আটকে যায়। সালকিয়ার হয়ে প্রথমার্ধে নিশ্চিত গোল মিস করেন সুমন মণ্ডল। মাঠ তুলনায় কিছুটা ছোট হওয়ায় উইং প্লে তেমন ছিল না। মাঝমাঠ বরাবরই আক্রমণ হচ্ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠ আরও ভারী হয়ে যায়। স্বভাবতই খেলার গতি কিছুটা কমে যায়। একটা সহজ সুযোগ নষ্ট আদর্শ তামাংয়ের। বিপক্ষের কিপারকে সামনে একা পেয়েও তাঁর গায়ে মারেন তিনি। একসময় মোহনবাগানে খেলেছেন আদর্শ। যথেষ্ট অভিজ্ঞ। কিন্তু বৃষ্টিভেজা মাঠে সেরা ফুটবল খেলা মোটেই সহজ ছিল না। বিরতির পর ম্যাচে ফেরার কিছুটা চেষ্টা করে সালকিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি বক্সের মধ্যে রাহুল দোয়ারিকে ফেলে দেন বিপক্ষের ডিফেন্ডার। পেনাল্টির আবেদন করে ইউকেএসসির ফুটবলাররা। খালি চোখে দেখে মনে হয় নিশ্চিত পেনাল্টি। কিন্তু স্পট কিক দেননি রেফারি। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে একটা দুর্দান্ত গোল করতে পারতেন রাহুল। তাঁর হাফ ভলি পোস্টে লাগে। গোটা ম্যাচে প্রায় হাফ ডজন সুযোগ নষ্ট। যার খেসারত দিতে হল। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে ১-১ করে সালকিয়া। শেষদিকে অধিনায়ক রাকেশ ধারাকে বক্সের ঠিক মুখেই ফাউল করে বিপক্ষের ফুটবলার। ভাল জায়গায় ফ্রিকিক পায় ইউনাইটেড। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি।
ম্যাচ শেষে রেফারিং নিয়ে ক্ষোভ ইউনাইটেড শিবিরে। কোচ দীপক মণ্ডল বলেন, 'রেফারিং কী হয়েছে সবাই দেখেছে। ওটা নিশ্চিত পেনাল্টি ছিল। দেওয়া হয়নি। এর আগেও বেশ কয়েকটা ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্ত আমাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে।' রেফারিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও একাধিক গোল মিস চিন্তায় রাখছে দীপককে। পাশাপাশি প্রত্যেক ম্যাচে গোল হজমও কপালে ভাঁজ ফেলছে একসময়ের সেরা ডিফেন্ডারের। দীপক বলেন, 'আমরা প্রচুর গোল মিস করেছি। অন্তত ছয় গোলে জিততে পারতাম। প্রথমার্ধেই চার গোল হতে পারত। তার বদলে গোল হজম করেছি। প্রত্যেক ম্যাচে ছেলেরা ভুল করে ফেলছে। রক্ষণ নিয়ে কিছুটা চিন্তায় আছি।' কোচিংয়ে হাতেখড়িতেই সাফল্য। প্রিমিয়ার ডিভিশনে ওঠার সুযোগ রয়েছে। তবে আপাতত সেই নিয়ে ভাবছেন না। প্রাথমিক লক্ষ্য সুপার সিক্স। ইউনাইটেডের পরের ম্যাচ ২৬ আগস্ট বেঙ্গল পুলিশের বিরুদ্ধে।
