আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুষম খাবার হিসাবে দুধের নামই সবার আগে আসে। বহু যুগ ধরে গরু, মোষ, ছাগলের দুধ খাওয়ার চল রয়েছে। কোথাও আবার ঘোড়া, উঠের দুধও খাওয়া হয়। আবার আজকাল উদ্ভিজ্জ দুধ হিসাবে আমন্ড, ওট, সোয়া মিল্কও বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু কখনও আরশোলার দুধ খেয়েছেন? হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। যে পতঙ্গ উড়লে ভয়ে বুক ধরফর করে ওঠে, তারই দুধ নাকি পুষ্টিতে হার মানায় গরুর দুধকেও।
যে সমস্ত খাবারে ব্যতিক্রমী পুষ্টিগুণ রয়েছে যেমন বেরি, বাদাম, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদিকে সুপারফুড বলে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন হয়ে উঠতে চলেছে আরশোলার দুধ বা 'কোকরোচ মিল্ক'। সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আরশোলার দুধ ঠিক কী? আসলে আরশোলার শরীর থেকে এক রকমের ঘন হলুদ রঙের তরল পদার্থ নির্গত হয়, যাকে বিজ্ঞানীরা আরশোলার দুধ বলে শনাক্ত করেছেন। তবে সব আরশোলা নয়, 'প্যাসিফিক বিটল ককরোচ' নামক এক প্রজাতির আরশোলার শরীর থেকে এই দুধ নির্গত হয়।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আরশোলার দুধে রয়েছে ভরপুর মাত্রায় প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, শর্করা এবং ফ্যাট। গরু, মোষের দুধের তুলনায় তিনগুণ বেশি পুষ্টি রয়েছে এই দুধে। আরশোলার দুধ ল্যাকটোজমুক্ত, তাই 'ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স' থাকলে এটি গরু-মোষের দুধের বিকল্প হতে পারে। একইসঙ্গে আরশোলার দুধের শর্করা স্বাস্থ্যকর। তাই এতে গরুর দুধের তুলনায় প্রোটিন, শর্করা এবং সর্বোপরি ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকলেও ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেই।
আরশোলার দুধ সংগ্রহ করা বেশ কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। গবেষণায় উঠে এসেছে, এক গ্লাস দুধের জন্য হাজার হাজার আরশোলা প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া মানুষের শরীরে এই দুধের প্রভাব সম্পর্কে এখনও গবেষণা চলছে। তাই এটি খাওয়া কতটা নিরাপদ তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে আরশোলার দুধ উৎপাদনের উপায় খুঁজছেন যা ভবিষ্যতে সুপারফুড হিসেবে গণ্য হতে পারে।
