আজকাল ওয়েবডেস্কঃ যতই তারুণ্য ধরে রাখতে চান না কেন, প্রকৃতির নিয়মে বার্ধক্য একদিন আসবেই। সময়ের আগে এলে তা মোটেই সুখকর নয়। আজকাল অনিয়মিত জীবনযাপনের জন্য অল্প বয়সেই দেখা দেয় একাধিক ক্রনিক রোগ। বয়স ত্রিশ পেরতে না পেরতেই শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রদাহজনিত সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস সহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে, অকালে মরচে পড়ছে শরীরের কলকব্জায়। তবে বিজ্ঞানের দৌলতে অনেক কিছু জয় করতে পারলেও আজও বয়সের চোখরাঙানি উপেক্ষা করার সাধ্যি কার! তবে রোজকার জীবনে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে পারবেন।
১. দিনে দু’বার খাওয়াঃ প্রাতঃরাশ, দুপুরের এবং রাতের খাবারের এই চিরাচরিত ধারণার পরিবর্তে সারাদিনে মাত্র দু’বার খাবার খান। আপনার খাওয়ার সময়সীমার মধ্যেই রাখুন সেই দুটি খাবার। যতটা সম্ভব ইন্টারমিটেট ফাস্টিং করার চেষ্টা করুন। এই নিয়ম মেনে চললেই সুফল দেখতে পাবেন।
২. নিয়মিত শরীরচর্চাঃ যে কোনও ব্যায়ামই একেবারে শরীরচর্চা না করার চেয়ে শ্রেয়। এটি আপনার শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখে এবং অকাল বার্ধক্যের সমস্যা সমাধান করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বর্ষাকালেও শরীরে জলের ঘাটতিতে মারাত্মক রোগ হানা দিতে পারে! কোন কোন লক্ষণ এড়িয়ে গেলেই বিপদ?
৩. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণঃ প্রত্যেকেরই বিশ্রাম নেওয়ার নিজস্ব নিয়ম রয়েছে। যতই কর্মব্যস্ততা থাকুক, বিশ্রাম অত্যন্ত প্রয়োজন। তবে তা শুধু শরীরের জন্য নয়, মনের শান্তির জন্যও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। মনে রাখবেন, শরীরের মতো মনের স্বাস্থ্যও ঠিক রাখা প্রয়োজন।
৪. ধূমপান বর্জনঃ ধূমপান ফুসফুসের জন্য ঘাতক। ফুসফুসের ক্যানসারের ৯০ শতাংশই তামাকের জন্য। শুধু ক্যানসার নয়, দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাস্থমা, সিওপিডি-র মতো অসুখেও আক্রান্ত হন তামাকসেবীরা। তামাকের নিকোটিন ক্ষণিকের উত্তেজনা দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে উদ্বেগ, অবসাদ, এবং স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি বাড়ায়। মস্তিষ্কের স্নায়ুতে ধীরে ধীরে জাঁকিয়ে বসে বিষ।
৫. পর্যাপ্ত ঘুমঃ সুস্থতার জন্য ঘুমের কোনও বিকল্প নেই। যে কোনও বয়সের মানুষের ৭-৮ ঘন্টা ঘুম অপরিহার্য। ঘুম শরীরকে নিরাময় করে, সার্বিকভাবে এনার্জি দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. পোষ্য প্রাণীমুক্ত শোওয়ার ঘরঃ পরিবারের সবচেয়ে আদরের সদস্য হয় পোষ্যরা। অনেকের বাড়িতেই পোষ্য কুকুর, বিড়াল থাকে। কিন্তু সারাদিন যতই চারপেয়েদের সঙ্গে সময় কাটান, ঘুমের সময়ে তাদের আলাদা রাখতে হবে। শোওয়ার ঘরে পোষ্য থাকলে ঘুমের মান ব্যাহত হতে পারে। একইসঙ্গে অ্যালার্জি এবং প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৭. দিনের মাঝে ঘুমঃ দুপুরের খাওয়ার পর ৩০ মিনিটের ঘুম আপনার মস্তিষ্ককে এনার্জি দেয়, হালকা ঘুমের মাধ্যমে কাজেও মনসংযোগ আসে।
৮. পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবঃ পরিবারের সদস্যরা আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই পরিবার, সম্পর্ককে গুরুত্ব দিন। মনে রাখবেন, আপনার আনন্দের ভিত্তি পরিবার সুস্থ জীবনের জন্যও অপরিহার্য।
৯. বিনোদনঃ বিশ্রাম এবং মানসিক সুস্থতার জন্য বিনোদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবসর সময়ে সিনেমা, নাটক দেখুন অথবা এমন জিনিসে ব্যস্ত থাকুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়। মন ভাল থাকলেই তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে শরীরেও।
১০. যৌনতাঃ সুস্থতার জন্য যৌনজীবনেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত রাখতে নিয়মিত শারীরিক মিলনে লিপ্ত হওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
