আজকাল ওয়েবডেস্ক: জিম থেকে ফিরেছেন সদ্য। শরীর ভেজা ঘামে। ভাবছেন, তৎক্ষণাৎ স্নান না করলে চারপাশের মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবে? গবেষণা কিন্তু বলছে, ঠিক উল্টো। পুরুষদের শরীরের ঘামের গন্ধ নাকি নারীদের মনে জাগিয়ে তোলে আকর্ষণ ও ঘনিষ্ঠতার ইচ্ছা!
না, কোনও রোমান্টিক গল্প নয়। বরং, বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেই উঠে এসেছে এমন তথ্য। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পুরুষদের ঘামে এমন নির্দিষ্ট কিছু রাসায়নিক যৌগ থাকে যেগুলি নারীদের মস্তিষ্কে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যা আবেগ, আকর্ষণ ও যৌন বাসনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
কী বলছে গবেষণা?
চীনা বিজ্ঞান একাডেমির অধীনস্থ একটি সংস্থার গবেষকরা সম্প্রতি ৪৬ জন নারী স্বেচ্ছাসেবকের উপর একটি পরীক্ষা চালান। তাঁদের চোখ বন্ধ করে নির্দিষ্ট সময় ধরে পুরুষদের ঘামের গন্ধ শোঁকানো হয়। এই গন্ধ ছিল একদম ‘প্রাকৃতিক’, অর্থাৎ কোনও ধরনের সুগন্ধি বা ডিওডোরান্ট ব্যবহার করা হয়নি। শরীরচর্চা এবং জিম করার পর এই ঘাম সংগ্রহ করা হয়।
আরও পড়ুন: ১২ জন স্ত্রী! বাচ্চা করাই নেশা! ১০২ সন্তানের বাবা হয়ে অবশেষে থামলেন ৬৮-র মুসা, কেন ক্ষান্ত দিলেন? কী বললেন এ যুগের ধৃতরাষ্ট্র?
আরও পড়ুন: ‘ধরবে নাকি?’ বিরাট পুরুষাঙ্গ দুলিয়ে কুপ্রস্তাব দেন বিখ্যাত ‘খান’! বলিউডের অন্ধকার দিক নিয়ে বিস্ফোরক শার্লিন চোপড়া
কী ফলাফল দেখা গেল গবেষণায়? গবেষকরা জানিয়েছেন, ঘামের গন্ধ শোঁকার পর নারীদের কর্টিসল লেভেলের পরিমাণ কমে যায়। এই হরমোনকে স্ট্রেস হরমোন বলে। ফলে ঘামের গন্ধ নারীদের স্ট্রেস কমে। সেই সঙ্গে দেখা যায়, তাঁদের মুডে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। সার্বিক ভাবে মন ভাল হয়ে ওঠে, এবং সামান্য হলেও আকর্ষণ বেড়ে যায় সেই ‘ঘামের উৎস’-এর প্রতি।
গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী জিয়াও জু বলেন, “অন্যান্য পুরুষ প্রাণী নারীদের আকৃষ্ট করার জন্য ফেরোমোন নামক এক প্রকারের গন্ধ নির্গমন করে। মানুষের শরীরেও প্রাণীজগতের মতোই ফেরোমোন থাকে। বিশেষ করে পুরুষদের ঘামে থাকা অ্যান্ড্রোস্টেনোন ও অ্যান্ড্রোস্টেরোন যৌগ নারীদের মন ও দেহে সূক্ষ্ম পরিবর্তন আনে। প্রেম-ভালবাসার প্রাথমিক পর্যায়ে এগুলির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রেমের গন্ধ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের ঘামের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক ফেরোমোন অনেক সময় সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। চলতি ভাষায় যাকে ‘কেমিস্ট্রি’ বা ‘কানেকশন’ বলা হয়, সেটি আসলে এই ঘ্রাণগত আকর্ষণেরই প্রকারভেদ। এছাড়া প্রাকৃতিক গন্ধ, বিশেষত ঘামের নিজস্ব গন্ধ অনেক ক্ষেত্রে এক ধরনের মানসিক সান্ত্বনা দেয়। আসলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের গায়ের গন্ধের সঙ্গে সেই মানুষটির উপস্থিতির চিহ্ন হিসাবে দেখে মানুষ। ফলে নারীরা কখনও কখনও না বুঝেই সেই গন্ধের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়েন, এমনকি আকৃষ্টও হন।
তবে সাবধান! ঘামের এই গুণে উদ্বেলিত হয়ে স্নান করা কিংবা সাবান-শ্যাম্পু দেওয়া কিন্তু ছেড়ে দেবেন না! শরীরের পরিচ্ছন্নতা সব কিছুর আগে। বেশি ঘামের ফলে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়, যা থেকে দুর্গন্ধ ও সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। তাই প্রাকৃতিক গন্ধের টানে কেউ যদি মজেও যান, তবুও নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা একান্ত দরকার।
