আজকাল ওয়েবডেস্ক: পানিহাটি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুনের ঘটনায় দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল ব্যারাকপুর আদালত। বুধবার দুপুরে ব্যারাকপুর আদালত দোষী অমিত পণ্ডিত, সঞ্জীব পণ্ডিত এবং জিয়ারুল মণ্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। ঘটনার প্রায় তিন বছর পর সাজা ঘোষণা হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত।
খুন হয়ে যাওয়া কাউন্সিলর অনুপম দত্তের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত বলেন, “আমরা আরও কঠোর শাস্তি চাইছিলাম। তবে আদালত যা ভাল মনে করেছে সেটাই করেছে। আমার আইন এবং আদালতের উপর আস্থা ছিল। ফাঁসি চেয়েছিলাম, তবে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হবে।”
বুধবার রায় প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সত্যব্রত দাশ বলেন, “আসামিদের আমৃত্যু কারাবাস ছাড়াও এক লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় আগরপাড়া স্টেশন রোডে নিজের পোষ্যের জন্য ওষুধ আনতে স্কুটি নিয়ে বেরিয়েছিলেন পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম। সেই সময় রাস্তার উপরেই পিছন থেকে এসে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। সেই দৃশ্য ধরা পড়ে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এলাকার একটি জমি প্রোমোটিংয়ের উদ্দেশ্যে দখলের চেষ্টা করছিল সঞ্জীব পণ্ডিত ওরফে বাপি। যে অনুপম হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্ত। অনুপম তাঁর কাজের প্রতিবাদ করেছিলেন। তার ফলস্বরূপ তাঁর সঙ্গে শত্রুতা তৈরি হয়। তার জেরেই পথের কাঁটা সরাতে অনুপমকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করে অনুপমকে খুন করার জন্য জিয়াউল মণ্ডলকে সুপারি দেয় সঞ্জীব। এরপরেই গুলি করে খুন করা হয় অনুপমকে। কাউন্সিলরকে গুলি করার পর এলাকাতেই লুকিয়েছিল অমিত। পরে তাঁকে হাতেনাতে পাকড়াও করে ফেলেন স্থানীয়রা। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জিয়ারুল ও সঞ্জীবের নাম জানা যায়। তিন জনকেই গ্রেপ্তার করে শুরু হয়েছিল তদন্ত।
পানিহাটি পুরসভার সর্বকনিষ্ঠ এবং দ্বিতীয়বারের কাউন্সিলর অনুপমকে খুনের পর শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক বিতর্ক। শাসকদলের পক্ষ থেকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছিল তৎকালীন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দিকে। যদিও অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছিলেন অর্জুন।
