লিভার ক্যানসারকে আর শুধু বয়স্ক মানুষ বা অতিরিক্ত ধূমপায়ী বা মদ্যপানকারীদের রোগ বলে মনে করা যায় না। এখন এমন তরুণদের মধ্যেও এর সংখ্যা বাড়ছে, যারা কখনও অ্যালকোহল সেবন করেন না। ৫ সেপ্টেম্বর ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত এক পোস্টে অনকোলজিস্ট ডা. সঙ্কেত মেহতা এই বাড়তি ঝুঁকির কারণগুলো ব্যাখ্যা করেছেন এবং কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়, সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ শেয়ার করেছেন।

ডা. মেহতা সতর্ক করে বলেছেন যে, লিভার ক্যানসার আর শুধু বয়স্ক মানুষ বা অতিরিক্ত মদ্যপানকারীদের সমস্যা নয়। তিনি লিখেছেন, “ড্রিঙ্কারস?! জানেন কি, লিভার ক্যানসারের হার এখন তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে। এমনকি যাঁরা একেবারেই অ্যালকোহল সেবন করেন না, তাঁদের মধ্যেও।”

তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯০ সালের পর থেকে লিভার ক্যানসারের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এর মধ্যে অনেক কেস ভাইরাল হেপাটাইটিসের সঙ্গে যুক্ত হলেও প্রায় ১৬% কেসের সঠিক কারণ অজানা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো নন-অ্যালকোহলিকদের মধ্যে হওয়া ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থেকে দেখা যায়।”

ভারতে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার প্রায় ১৬–৩২% প্রাপ্তবয়স্ককে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ প্রায় ১২ কোটি মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। বিশ্বব্যাপী ১৫–৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের হার ১৯৯০ সালে যেখানে ছিল ২৫%, তা ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮%। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ৫০ লক্ষ তরুণ-তরুণীর উপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি ১৩% বাড়িয়ে দেয়।


তাহলে হঠাৎ এত বাড়তি ঝুঁকির কারণ কী? ডা. সঙ্কেত মেহতা জানাচ্ছেন, এর মূল কারণ আমাদের জীবনযাত্রা এবং মেটাবলিক সমস্যা:

অলস জীবনযাপন
অতিরিক্ত খাওয়া ও মানসিক চাপ
ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য মেটাবলিক রোগের বাড়তি হার
তবে সুসংবাদ হল, কিছু অভ্যাস পাল্টালে লিভারকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

ডা. মেহতার পরামর্শ, যদি ফ্যাটি লিভার থাকে, নিয়মিত লিভার টেস্ট করান।
শরীরচর্চা করুন, সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, ওজন এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
প্রাথমিক লক্ষণগুলির দিকে নজর দিন। যেমন অস্বাভাবিক ক্লান্তি, অস্বস্তি বা হালকা জন্ডিস।

 ডা. মেহতার জোরাল বার্তা, “লিভার ক্যানসার শুধু মদ্যপানকারীদের নয়, অ্যালকোহল না খাওয়া লোকদেরও হতে পারে। তাই সময়মতো স্ক্রিনিং করলে জীবন বাঁচানো সম্ভব।”