ওজনের ঝরিয়ে কাঙ্ক্ষিত চেহারা পাওয়া নিঃসন্দেহে একটি বড় সাফল্য। বিশেষত যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের জন্য। তবে ওজন হ্রাস, বিশেষ করে স্থূলকায় ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, অনেক সময় বাড়তি ঝুলে যাওয়া বা ঢিলে চামড়ার সমস্যা নিয়ে আসে। ত্বক তার দৃঢ়তা হারায় এবং নরম হয়ে যাওয়ার কারণে ভাঁজ পড়া, কুঁচকানো বা ঢিলে দেখাতে পারে।

তবে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াটি কমিয়ে আনা সম্ভব, যদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস মেনে চলা হয়, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং দৃঢ়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ড. শিখা সিং, যিনি প্রায়ই ফিটনেস নিয়ে পরামর্শ শেয়ার করেন, এক ইনস্টাগ্রামে পোস্টে জানান কেন ওজন কমানোর পর ত্বক ঝুলে যায় এবং কীভাবে তা এড়ানো যায়।

ড. সিং একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝান কেন ত্বক ঝুলে যায়। তিনি দু’টি বেলুন নেন—একটি ছিল স্বাভাবিক অবস্থায় ফোলানো হয়নি। আরেকটি তিনি প্রথমে ফুলিয়ে তারপর হাওয়া ছেড়ে দেন। যে বেলুনটি আগে ফোলানো হয়েছিল, সেটি হাওয়া ছাড়ার পর কুঁচকানো দেখায়, অন্যদি কে যেটি কখনও ফোলানো হয়নি সেটি মসৃণই থাকে। ড. সিং-এর মতে, আমাদের ফ্যাট কোষগুলোর ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে।

তিনি বলেন, “আমাদের ফ্যাট সেলের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। যখন আমরা ওজন বাড়াই, ফ্যাট সেলগুলো চর্বিতে ভরে গিয়ে বড় হয়ে যায়। আবার যখন আমরা ওজন কমাই, তখন ফ্যাট বেরিয়ে যায় এবং ফ্যাট সেল ছোট হয়, কিন্তু তারা আর আগের আকারে ফিরে যায় না। ফ্যাট সেল সব সময় প্রস্তুত থাকে, যাতে আমরা আবার ওজন বাড়ালে দ্রুত চর্বি জমাতে পারে।”

ওজন কমানোর পর ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখতে, ডা. সিংহ পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিটি খাবারে প্রোটিন রাখার। দ্বিতীয়ত, তিনি সারাদিনে অন্তত তিন লিটার জল পান করার কথা বলেছেন, যাতে শরীর ভাল ভাবে হাইড্রেট থাকে। আর শতিনি প্রতিদিন ৩০–৪৫ মিনিট দ্রুত হাঁটার অভ্যাস এবং ওজন কমানোর পর স্ট্রেংথ ট্রেনিং অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন।

ওজন কমানোর পর ঝুলে যাওয়া ত্বক একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সঠিক অভ্যাসের মাধ্যমে এটিকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সুষম প্রোটিন গ্রহণ, পর্যাপ্ত জল পান, নিয়মিত হাঁটা এবং স্ট্রেংথ ট্রেনিং শুধু ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখতেই সাহায্য করে না, বরং শরীরকে আরও শক্তিশালী ও সুস্থ রাখে। তাই ওজন কমানোর যাত্রায় যেমন ধৈর্য প্রয়োজন, তেমনই নিজের শরীর এবং ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়াও সমান জরুরি।