আজকাল ওয়েবডেস্কঃ গত কয়েক দশক ধরে সারা বিশ্বের বড় সমস্যাগুলির একটি হল প্লাস্টিক দূষণ। মানুষের মস্তিষ্ক, রক্ত, স্তনদুগ্ধ সহ শিরা ও ধমনিতেও প্রবেশ করছে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক। যার কারণে নানা ধরনের মারাত্মক শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে মানব শরীরে। এনিয়ে বার বার সতর্ক করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা প্লাস্টিক দূষণের টেকসই সমাধান খুঁজতে গবেষণায় ব্যস্ত। সেই প্রচেষ্টারই এক আশাব্যঞ্জক সাফল্য এসেছে জাপানে। 

সম্প্রতি জাপানের রিকেন সেন্টার ফর ইমার্জেন্ট ম্যাটার সায়েন্সের গবেষকরা এক নতুন ধরনের প্লাস্টিক আবিষ্কার করেছেন যা সমুদ্রের জলে দ্রবীভূত হয়। সাধারণ পেট্রোলিয়াম থেকে তৈরি প্লাস্টিকের মতো দেখতে হলেও, সমুদ্রের জলে পড়লে নুনের সংস্পর্শে এটি ভেঙে তার মূল উপাদানে ফিরে আসে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একেবারে জলে মিশে যাবে এই প্লাস্টিক। যার থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার সৃষ্টি হওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। একইসঙ্গে মাটিতে কয়েক দিনের মধ্যে মিশে গিয়ে মাটির উর্বরতা বাড়িয়ে দেয়। এই প্লাস্টিকের কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে: 

* সামুদ্রিক জলে এটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বচ্ছ হয়ে যায়; মাটিতে ১০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।

* এই প্লাস্টিক খাবারের যোগ্য উপাদান দিয়ে তৈরি৷ এটি বিষহীন, আগুন প্রতিরোধী এবং পেট্রোলিয়ামভিত্তিক প্লাস্টিকের মতোই মজবুত।

* এটি কোনও ক্ষুদ্র পলিমারের কণা সৃষ্টি না করে সম্পূর্ণ ভেঙে যায়।

*এই প্লাস্টিক ভেঙে যাওয়ার সময় এটি কার্বনডাইঅক্সাইড নির্গত করে না  ।

* বিচ্ছিন্ন হয়ে এটি নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের মতো মৌলিক পুষ্টি ছড়িয়ে দেয়, যা মাটিকে উর্বর করে তোলে।।

* নুন জলে দ্রবীভূত হওয়ার পরে অন্তত ৮২–৯১% উপাদান পুনরুদ্ধারযোগ্য। এই প্লাস্টিক খাবার প্যাকেজিং, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ৩‑ডি প্রিন্টিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়। 

এখনও পর্যন্ত এই প্লাস্টিকের দাম ও মাপের ব্যাপারে বিশদে জানা যায়নি। একইসঙ্গে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, চিকিৎসা ও খাবারের ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার নিশ্চিত করতে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।