আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় মিষ্টির ভাণ্ডারে অসংখ্য নাম থাকলেও জিলিপির জায়গা আলাদা। সরু সরু পাক ঘুরে তেলে ভাজা, তারপর চিনির রসে ডোবা এই মিষ্টি শুধু স্বাদের জন্যই নয়, তার রূপ ও ঘ্রাণের জন্যও মানুষের মন কেড়ে নেয়। প্রশ্ন একটাই—জিলিপি কি সকালের খাবার, বিকেলের জলখাবার, নাকি রাতের ডেজার্ট? উত্তর হলো—সবই!
আজ যেটিকে আমরা ভারতের সবচেয়ে প্রিয় মিষ্টি বলি, তার শিকড় কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে। খাদ্য ইতিহাসবিদদের মতে, জিলিপির উৎপত্তি ‘জালাবিয়া’ নাম নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে। পারস্য থেকে ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হাত ধরে ১৩শ থেকে ১৫শ শতকের মধ্যে এটি ভারতে আসে। প্রাচীন পারস্যের বিখ্যাত রন্ধনপুস্তক 'কিতাব আল-তাবীখ' এবং ১০ম শতকের ইবন সাইয়ার আল-ওয়াররাক-এর বইয়েও জিলিপির উল্লেখ আছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় রান্নাঘরে এ মিষ্টি ঢুকে পড়ে, আর এখন এটি উৎসব ও আনন্দের প্রতীক।
আরও পড়ুন: পেট ব্যথা মানে শুধুই গ্যাস-অম্বল নয়, ৫ ভয়ঙ্কর অসুখে প্রাণ পর্যন্ত যেতে পারে! কখন সতর্ক হবেন?
উত্তর ভারতের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান কিংবা মধ্যপ্রদেশে জিলিপি সকালের প্রাতঃরাশের অপরিহার্য অঙ্গ। গরম দুধ বা দইয়ের সঙ্গে পরিবেশন করলে এর স্বাদ দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। পশ্চিম ভারতে মহারাষ্ট্র ও গুজরাতে বিশেষত দশেরা ও দীপাবলির সকালে ফাফড়ার সঙ্গে জিল;জিলিপির জুটি সবচেয়ে জনপ্রিয়। দক্ষিণ ভারতে অবশ্য বিকেলের চায়ের সঙ্গে বা হালকা জলখাবারে জিলিপি খাওয়ার রীতি বেশি দেখা যায়।
শুধু ভারতেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে এখনও রমজান ও অন্যান্য উৎসবে জিলিপি অপরিহার্য। রেস্তোরাঁর ডেজার্ট মেনুতেও এখন এটি আধুনিক পরিবেশনায় আসে—রাবড়ির সঙ্গে, কিংবা আলাদা গরম পরিবেশনে। সকালের দুধে চুবিয়ে খাওয়া হোক, বা সন্ধ্যার চায়ে মচমচে স্বাদে, জালেবি সময়ের বাঁধনে বাঁধা নয়।
জিলিপির ইতিহাস যেমন বহুযুগ পেরিয়ে এসেছে, তেমনি তার স্বাদও বহুমাত্রিক। এটি কখনো ঐতিহ্য, কখনো উৎসবের অংশ, আবার কখনো নিছক নস্টালজিয়া। তাই সকালের নাস্তা হোক বা রাতের মিষ্টান্ন—জালেবি সবসময়েই ভারতের anytime treat।
