দীপাবলির সময়, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর, আলোর চারপাশে পোকামাকড়ের ভিড় বেড়ে যায়। এই সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন, আর্দ্রতা এবং হালকা ঠান্ডা পরিবেশ তাদের প্রজননের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠে। ফলে এই ছোট ছোট উড়ন্ত পোকামাকড় দরজা–জানালার ফাঁকফোকর দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে, যা বাড়ির মানুষের জন্য বড় ঝামেলার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এইসব পোকামাকড় সরাসরি নানা ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু পোকা কামড়ালে বা হুল ফোটালে ত্বকে অ্যালার্জি, চুলকানি বা ফোলা দেখা দেয়। এছাড়া এরা খাবার এবং জল দূষিত করতে পারে। যার ফলে পেটের অসুখ বা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।

বিশেষ করে উড়ন্ত পোকা কাঠের আসবাবপত্র এবং কাগজের জিনিসপত্রের ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে। এরা পাখা এবং বর্জ্য ফেলে দেয়। ফলে ঘর নোংরা হয়ে যায় এবং দুর্গন্ধ ছড়ায়। অনেক সময় এগুলো বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের মধ্যে ঢুকে শর্ট সার্কিটের ঝুঁকিও বাড়ায়।

পোকামাকড় দূর করার ঘরোয়া উপায়

সবচেয়ে সহজ এবং নিরাপদ উপায় হল নিম বা লবঙ্গের তেল ব্যবহার করা। নিমতেল জলে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে নিয়ে জানালা, দরজা এবং লাইটের চারপাশে ছিটিয়ে দিন। লবঙ্গের তেলের গন্ধও পোকামাকড় সহ্য করতে পারে না। তাই এটিও কার্যকর প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
আলো পোকাদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে। তাই সন্ধ্যায় ঘরের ভিতরে কম আলো রাখুন বা দরজা–জানালা ভালোভাবে বন্ধ করে দিন। চাইলে এক বালতি জলে কিছু ভিনেগার মিশিয়ে আলো লাগানো স্থানে রেখে দিন। পোকামাকড় এতে আকৃষ্ট হয়ে জলে পড়ে ডুবে যাবে। এছাড়াও লেবুর রস এবং ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

অন্য কার্যকর উপায়

কর্পূরের গন্ধও পোকামাকড় দূর করতে দারুণ কার্যকর। ঘরে কর্পূর জ্বালিয়ে রাখলে তার ধোঁয়ায় পোকামাকড় পালিয়ে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ঘর পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা। দরজা–জানালার ফাঁকফোকর বন্ধ করে দিন এবং ঘর নিয়মিত ঝাড় দিন, মুছুন।

দীপাবলির সময় আলো এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে পোকামাকড়ের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। এই সময় ঘরকে পোকামাকড়মুক্ত রাখা যেমন স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জরুরি, তেমনই মানসিক স্বস্তির জন্যও প্রয়োজনীয়। মূল কথা হল, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখা, অযথা আলো না জ্বালানো এবং প্রকৃতিনির্ভর পদ্ধতিতে সতর্ক থাকা। সামান্য যত্ন এবং নিয়ম মেনে চললে উৎসবের আনন্দ পোকামাকড়ের ঝামেলা ছাড়াই উপভোগ করা যায়। শরীরও সুস্থ থাকবে।