আজকাল ওয়েবডেস্ক: একদিকে ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইনের প্রস্তাব, অন্যদিকে আরজি কর-এর ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মোকাবিলায় পাল্টা আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু। বুধবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলকে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। 

 

তাঁর কথায়, 'আগামী সপ্তাহে বিধানসভায় অধিবেশন ডেকে ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসির বিল 'পাস' করিয়ে রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে।' একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপাল বিলে স্বাক্ষর না করলে ঘন্টার পর ঘন্টা সেখানে গিয়ে দলের মহিলা ও পুরুষরা গিয়ে বসে থাকবেন। 

 

একইসঙ্গে আগামী আন্দোলনের কর্মসূচি তৈরি করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, 'আগামী শুক্রবার কলেজগুলির গেটে গেটে ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসির দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন করবেন।' দলের ব্লক সভাপতিদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, ৩১ আগষ্ট সমস্ত ব্লকে মিটিং হবে এবং ১ সেপ্টেম্বর ব্লকে ব্লকে দলের মহিলারা ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসির দাবিতে এবং নারী সুরক্ষায় কড়া আইন আনার দাবিতে আন্দোলন করবেন। 

 

দলে যারা সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় নয় তাঁদের সকলের প্রতি মমতার কড়া নির্দেশ, এবিষয়ে সক্রিয় হতেই হবে। তাঁর কথায়, 'সমাজ মাধ্যমে ভুয়ো ভিডিওর বিরুদ্ধে প্রচার এবং সেটা পুলিশের নজরে আনতে হবে।' 

 

উপস্থিত দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বদলা নয়, বদল চাই বলেছিলাম। আজ বলছি না কামড়ালেও ফোঁস করতে শিখুন। চক্রান্তকারীদের মুখোশ খুলে দিতে ফোঁস করতে হবে। যেটা করা দরকার সেটা আপনারা ভালো বুঝে করবেন।' 

 

মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'গতকাল পুলিশ সংযত থেকে বিজেপির চক্রান্তকারীদের হাতে মৃতদেহ তুলে দেয়নি।' বুধবার বিজেপির ডাকা বনধ নিয়ে তিনি বলেন, 'বিজেপি জেনেশুনে বনধ ডেকেছে। ওদের মৃতদেহ চাই। আমরা বিচার চাই। বাংলাকে বদনাম করার চক্রান্ত চলছে।' 

 

আরজি কর-এর ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘটনা ঘটার পর তিনি পাঁচদিন সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই মামলার তদন্ত সিবিআইকে দেওয়া হল। তাঁর কথায়, 'সিবিআইয়ের হাতে দিয়ে কেসটা ওরা জলে ফেলে দিল।' 

 

কলেজে ছাত্র নির্বাচন প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি মনে করি ছাত্র নির্বাচন হওয়া উচিত। পুজোর পর এবিষয়ে পদক্ষেপ নিতে তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নির্দেশ দেন। 

 

আরজি কর-এর ঘটনায় বিচার চেয়ে এদিন জুনিয়র ডাক্তাররা একটি মিছিল করেন। মিছিলকে সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বার্থে এদিনও মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেন।

 

 মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজস্থান, অসম, মধ্যপ্রদেশ বা মনিপুরের মতো ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেননি।